কলকাতা ব্যুরো: মনমোহন সিং, রাহুল গান্ধী থেকে এ রাজ্যের সুজন চক্রবর্তী, মদন মিত্র, অধীর চৌধুরী -সকলেই একে একে করোনার ছোবলে আক্রান্ত। প্রথম দুজন অবশ্য সেভাবে এ রাজ্যের ভোটের জনতার ভিড় বাড়াতে মাঠে নামেননি। তবে দ্বিতীয় দুজন অবশ্যই গত একমাস ধরে ভোট প্রচারে চষেছেন রাজ্যের এ মাথা থেকে সে মাথা। এদের বাইরে অশীতিপর কবি শঙ্খ ঘোষ করোনার আক্রমণে মারা গেলেন। তিনি অবশ্য ভোট বা তার ধারে কাছে ছিলেন না। কিন্তু তাকেও রেয়াত করেনি চীনের ভাইরাস।
ফলে কে কি কিভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন, আর কার জটিলতা বেশি হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এরাজ্যে গত কয়েকদিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। ২৪ ঘন্টায় যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যেভাবে আছড়ে পড়েছে গোটা দেশে, তাতে কে নিস্তার পাবে, আর কে পাবে না, এখন সেই আতঙ্ক ক্রমে চেপে বসছে নাগরিকদের মধ্যে।
এই অবস্থায় হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার পর্যাপ্ত বেড না থাকা, অক্সিজেনের অভাব -আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মত রাজ্যে অক্সিজেন যোগাতে কেন্দ্রীয় সরকার হাত লাগালেও এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত তেমন ভাবে কেন্দ্রকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। একইসঙ্গে রাজ্য সরকার শুধুমাত্র ওষুধের জন্য এবং টিকার জন্য কেন্দ্রের কাছে দরবার করলেও, রেলের দূর পাল্লার ট্রেনের কামরায় যে হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা হয়েছে, তার সুবিধা কেন্দ্রের কাছে চাইনি রাজ্য। অক্সিজেনের অভাব মেটাতে কেন্দ্রের সহযোগিতা চেয়েছে বলেও খবর নেই।
ফলে দিনে দিনে যেভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আগামীতে পরিস্থিতি সামাল দিতে কতটা সফল হবে বর্তমান কেয়ারটেকার সরকার, তা নিয়েও সংশয় গভীর হচ্ছে। যদিও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন ১৩ হাজারের বেশি করোনার বেডের ব্যবস্থা হচ্ছে। ৮০ টি বেসরকারি হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার নিজেদের হাতে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। কিন্তু বাস্তবে কাজের সময় যে বেড পাওয়া যাচ্ছে না, পাওয়া যাচ্ছে না, মিলছে না অক্সিজেন তা এখন দেখতে পাচ্ছেন নাগরিকরা বাস্তব উপলব্ধি থেকে।