মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারে কারা থাকছেন, সে ব্যাপারে সবকিছু জানা না গেলেও বিভিন্ন নাম নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। জানা গিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য ১৫ জনের মতো হতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৫ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে তালিকাটি চূড়ান্ত হবে। বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে তালিকার বিষয়ে কথা বলেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। কারা কারা থাকতে পারেন, কতজন থাকতে পারেন-এসব নিয়ে আলোচনা চলছে৷
বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি লিয়াজোঁ কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মাহফুজ আলম বলেন, সমন্বিত রূপরেখা বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করা হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। কারা কারা থাকতে পারেন, কতজন থাকতে পারেন-এসব নিয়ে আলোচনা চলছে৷ কোন রূপরেখা ও কাজের ভিত্তিতে দপ্তর ভাগ হবে, কী হবে না হবে, সেটি মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
লিয়াজোঁ কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাসীর আবদুল্লাহ বলেন, লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছে। অনেকে বিভিন্ন নাম দিয়েছেন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলি কেমন দেখতে চায়, কীভাবে চায়, কীভাবে হলে ভালো হয়, রাজনৈতিক শূন্যতা থেকে উত্তরণ কীভাবে ঘটানো যায়-এসব বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই ছাত্রদের ওপর আস্থা রেখেছে।
অনেক নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাঁদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও একজন বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তাঁর পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাঁদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলগুলি তাঁদের কাছেও পছন্দের কিছু নাম দিয়েছে। দলগুলি সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজেদের নাম দিতে চাইছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য সদস্যদের মনোনীত করার আগে রাষ্ট্রপতি তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আলোচনার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, আলোচনার জন্য তাঁদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার পরিচালনার জন্য তাঁর নিজেরও কিছু পছন্দ থাকতে পারে। দেশে ফেরার পর তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারের অন্য সদস্যদের তালিকা চূড়ান্ত হবে।
অনেক নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাঁদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও একজন বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তাঁর পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে। এদিকে দেশবাসীর উদ্দেশে এক বার্তায় ইউনূস বলেছেন, ‘কোনো রকম ভুলের কারণে আমাদের এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়।’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিন দিন ধরে দেশে কার্যত কোনো সরকার নেই। ফলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য তাগিদ দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পতন হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো সহজ হবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন নতুন যে সরকার গঠিত হবে তাকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনর্গঠনের দীর্ঘ কাজ শুরু করতে হবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেই পথ থেকে সরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকার এখনও গঠিত না হওয়ায়, এটি কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে, কখন নির্বাচন হতে পারে এবং কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে তা এখনো নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শেখ হাসিনার পদত্যাগে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।অন্তর্বর্তী সরকার বেসামরিক নেতৃত্বাধীন হতে চলেছে, তবে সেনাবাহিনীর হাতে কতটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে তা স্পষ্ট নয়।