কলকাতা ব্যুরো: প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চার বিচারপতির নজিরবিহীন প্রেস কনফারেন্স যদি সাম্প্রতিক অতীতের সবচেয়ে আলোচিত ও স্পর্শকাতর বিষয় হয়, তবে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বিতর্কিত ট্যুইট তাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।
প্রশান্ত ভূষণের এক ট্যুইট-ঢিল একদিকে নড়িয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের ভীত, আবার তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে জড়িয়েছে গোটা দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ। বিতর্কিত ট্যুইট মন্তব্যের জন্য ইতিমধ্যে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আবার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দিতে শাস্তি ঘোষণা দু’দিন পিছিয়ে দিয়েছে আদালত। ২৪ আগস্ট সেই বিচারের বাণী শোনাতে চায় দেশের শীর্ষ আদালত। আবার ভূষণের বক্তব্যকে সঠিক বলে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পরেছে সমাজের বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ। এই অবস্থায় শুধু বিদগ্ধ আইনজ্ঞরাই নন, বিভিন্ন আইনজীবী সংগঠন তাঁর হয়ে সুপ্রিম কোর্টের ফয়সালার বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছে। প্রশান্ত ভূষণ অবশ্য এখনো ভুল স্বীকার নয়, তাঁকে বা তাঁর ট্যুইটকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে তা বিবেচনার অনুরোধ করেন শীর্ষ আদালতকে।
আবার কলকাতার বর্ষীয়ান আইনজীবীদের একটা অংশ তাঁর শাস্তি মকুব করতে গণচিঠি লিখেছে। অরুণাভ ঘোষ বলছেন, ভূষণ কোনো অন্যায় বলেননি। বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ভূষণের শাস্তি হলে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ হবে। বর্ষীয়ান আইনজীবীদের অধিকাংশই একমত, প্রশান্ত ভূষণ যা বলেছেন তার সারবত্তা আছে। আবার অল ইন্ডিয়া লইয়ার্স এসোসিয়েশন ফর জাস্টিস সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সহ সারা দেশের বিভিন্ন আদালতে ভূষণের সমর্থনে বিক্ষোভ ধরণা চলে।
ভূষণের দুটি ট্যুইট থেকে বিতর্কের ঝড় ওঠে। তাঁর ট্যুইট ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। জুলাইয়ে ট্যুইটারে প্রশান্ত ভূষণ লেখেন, ‘ভবিষ্যতে ঐতিহাসিকরা যখন গত ছ’বছরের দিকে ঘুরে তাকাবেন, তখন দেখতে পাবেন যে ঘোষিত জরুরি অবস্থা না হলেও কীভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।’ তিনি আরও লেখেন, সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা ও চার বিচারপতির ভূমিকাও সে সময় বিশেষভাবে চিহ্নিত হবে। এর সঙ্গেই দেশের প্রথম বিচারপতি ছুটিতে গিয়ে হারলে ডেভিডসন বুলেটে মাস্ক ও হেলমেট ছাড়া ছবি দেখেও মন্তব্য করে ট্যুইট করেন ভূষণ। পরে অবশ্য সেখানে নিজের ত্রুটি স্বীকার করে নেন।
এখন তাঁর শীর্ষ আদালতকে নিয়ে ছুড়ে দেওয়া ঢিল কার গায়ে কতটা লাগে সেটাই দেখার। এই লকডাউনের আবহে বলিউডের সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু ইস্যুতে মিডিয়া হাইপের মাঝেও দিল্লি বসে আরেক প্রশান্তের ট্যুইট ভাগ বসিয়েছে মিডিয়া কভারেজে।