কলকাতা ব্যুরো: রাহুল গান্ধীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ফেলে, মাটিতে ফেলে দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে শেষ পর্যন্ত তাদের নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়া আটকালো উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গণধর্ষণ ও নিগৃহীতার মৃত্যুর ঘটনায় এখন ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী ও বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এদিন সকালে দিল্লি থেকে হাত্রাশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের সমর্থকরা। যদিও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এ দিন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এরই মধ্যে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার পরেই গ্রেটার নয়ডায় রাহুল গান্ধীর গাড়ি আটকায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বাদানুবাদ। ঠেলাঠেলি। হুড়োহুড়ি। একসময় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা নির্যাতিতার পরিবারের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
তখন পদে পদে পুলিশ তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। এমনকি রাহুল গান্ধীর ঘাড়ে ধাক্কা দিতেও দেখা যায়। একসময় মাটিতে পড়ে যান রাহুল গান্ধী। অভিযোগ, পুলিশ তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। একসময় অনড় অবস্থানে যমুনা এক্সপ্রেস এর উপর পুলিশ এবং রাহুল গান্ধীকে ঘিরে তার নিরাপত্তা রক্ষী ও কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে প্রবল ঝামেলা শুরু হয়। হাতাহাতি, গুঁতোগুঁতি চলতে থাকে। প্রায় বেলা তিনটে নাগাদ উত্তরপ্রদেশ পুলিশ রাহুল গান্ধীকে ১৪৪ ধারা ভেঙে ঢোকার চেষ্টার জন্য গ্রেপ্তার করে।
যদিও এতে সাময়িক সেখানে উত্তেজনা কমাতে পারলেও হাত্রশের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকার এখন প্রবল চাপে। শুধু দেশ নয়, বিদেশের থেকেও এই ঘটনায় নিন্দা শুরু হয়েছে। এ দিনই উত্তরপ্রদেশের সরকারের তৈরি করা স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিমের সদস্যরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ যেভাবে পরিবারকে অন্ধকারে রেখে গভীর রাতে কেরোসিন তেল ঢেলে নিগৃহীতাকে বেওয়ারিশ লাশের মতো জ্বালিয়ে দিয়েছে, তা কিন্তু আগুনে ঘি ঢেলেছে।
একদিকে গণধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে নিগৃহীতাকে মারধর করার প্রমাণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠেছিল। কিন্তু তারপরে পুলিশের এমনভাবে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উত্তর প্রদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে সারা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। এদিন নয়ডাই দাঁড়িয়েই প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, এক বছর আগে আমরা এখান থেকেই এক নারীর জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলাম। উন্নাও এর সেই মেয়ের ঘটনা মানুষ ভোলেনি। আবার এটা প্রমাণ হলো, উন্নয়াও এর ঘটনার পরেও উত্তরপ্রদেশে কোন কিছুই পরিবর্তন হয়নি।