কলকাতা ব্যুরো: জনগণের ভালো করার কথা বলে তারা এতদিন ভোট চাইছিলেন। কিন্তু সেই জনগণকে যে রাজনীতিকরা থোড়াই কেয়ার করেন, তা প্রমান হলো আবারও। করোনা বিধি না মানায় রাজ্যে ভোটের প্রচার বন্ধ করতে নাগরিকরা বহুদিন থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন-নিবেদন করছিলেন। সমালোচনা চলছিল রাজনীতিকদের। কিন্তু তাতে বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি রাজনৈতিক দলগুলোর।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টের প্রবল গুতোর পর প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়ে দিলেন রাজ্যে শুক্রবারের সফর বাতিল করেছেন। আর তার ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল, এ রাজ্যের ভোটের যাবতীয় প্রচার মিছিল বন্ধ। শুধুমাত্র পাঁচশোর মধ্যে লোক নিয়ে ভার্চুয়াল প্রচার এর রাস্তা কমিশন খুলে রেখে দিয়েছে। কারণ এর আগেই প্রধানমন্ত্রীর সভা ভার্চুয়াল হতে পারে বলে হাওয়ায় খবর ছিল।
তাই গত ১৫ দিন ধরে হাইকোর্টের কিছু করে দেখানোর নির্দেশ বা নাগরিকদের সমালোচনার মুখে পড়েও কমিশন যে রাস্তা নেয়নি শুধু রাজনৈতিক বাবুদের খুশি রাখতে, এ দিন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই তারাও তড়িঘড়ি সাহসী হয়ে উঠেছে। করোনা বিধি না মেনে দলগুলির প্রচার না করার অভিযোগে মিটিং-মিছিল বাতিল করতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। নাগরিকরা মনে করছেন, এর থেকে হাস্যকর, মেরুদণ্ডহীনতার নমুনা আর কিছুই হতে পারে না।
নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেই ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়ে দিলেন, তিনিও আগামী দুটি দফার প্রচার আর কোন সভা করে করবেন না তিনিও ভার্চুয়াল প্রচার এর রাস্তা খুলে রেখে দিলেন।
এবার প্রশ্ন উঠছে, সিপিএম, কংগ্রেস দিন দশেক আগেই বড় সভা না করার ব্যাপারে যদি সহমত হতে পারে এবং আগাম ঘোষণা করতে পারে, তাহলে বিজেপি এবং তৃণমূল নয় কেন রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিরোধীরা যে বারে বারে অভিযোগ কমিশনের বিরুদ্ধে তুলছে কেন্দ্রের ধামাধরা হওয়ার, সেই অভিযোগ যে অনেকটাই সত্যি, তা এদিন বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার সময় থেকেই স্পষ্ট। অন্যদিকে তৃণমূল এ ব্যাপারে বিজেপিকে বারংবার অভিযুক্ত করলেও, তারা প্রচার না করার ঝুঁকি নিতে পারেনি। এখন একদিকে নরেন্দ্র মোদির প্রচার বন্ধ করার ঘোষণার পর যখন নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার না করার ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলনা বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি।