প্রতিবেদন – গৌর শর্মা
খনি অঞ্চলের আঞ্চলিক মূল সমস্যাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে অন্ধকারে রেখে এবারের বিধান সভা নির্বাচন হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার খনি অঞ্চলে। অবৈধ কয়লা ব্যাবসার কালো টাকা কয়লার সিন্ডিকেট কোথায় পৌছে দিচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তর কাদা ছোঁড়াছুড়ি হলেও ধস, গ্যাস ও আগুনে বাস্তহারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির এই জ্বলন্ত সমস্যাটিকে ডান –বাম বা গেরুয়া, কোন দলই এবারের নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্ব দেয়নি। বরং সুকৌশলে খনি অঞ্চলের মূল সমস্যাটিকে অন্ধকারে রেখে কুর্শির লড়াইয়ে ব্যাস্ত সব রাজনৈতিক দল।
খনি অঞ্চলে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ে কয়লা মাফিয়াদের বরাবরই একটা ভূমিকা থাকে। এবারও তার ব্যাতিক্রম নেই। নির্বাচনের আগে অবৈধ কয়লা ব্যাবসায়ে সি,বি,আই ও আয়কর দপ্তরের ছাপ্পা কিছুটা প্রভাব ফেলবে খনি অঞ্চলের এবারের বিধান সভা নির্বাচনে। তার একটা বড় কারণ কাঁচা টাকা সারাবছর যেমন তেমন আমদানি চলে। কিন্তু ভোটের আগে কয়লার বেআইনি টাকাই একটা বড় ভাড়ার তৈরি করে সব রাজনৈতিক দল। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির ধরপাকড় ও নজরদারিতে সেই টাকার যোগান কমেছে। যার প্রভাব সরাসরি পড়বে ভোটে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।
কয়লা মাফিয়ারা অবৈধ কয়লা ব্যাবসার এই অচলাবস্থার জন্য সরাসরি আঙ্গুল তুলছেন বি,জে,পির দিকে। ফলে এই সমীকরণেই আগামী ২৬ এপ্রিল এবারের বিধান সভা নির্বাচন হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানের কয়লা খনি অঞ্চলের ৭টি বিধান সভায়।
সব রাজনৈতিক দলই প্রচারে সিবিআই হানা এবং কার লোক ফাঁদে পড়ল, কে কোথায় টাকা দিয়েছিল, তা নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে সব দলই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এই খনি অঞ্চল যেকোনো দিন ধ্বসে যেতে পারে বলে আশঙ্কার রিপোর্ট বারেবারেই দিয়ে এসেছেন। তা থেকে নিস্তার পাওয়ার মতো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা বলছে না কোন রাজনৈতিক দলই। যা এখানকার নাগরিকদের একটা বড় অংশের কাছে ভয়ের কারণ। তারা মনে করছেন, সব রাজনৈতিক দল আসলে চটকদার প্রচার করে, একে অপরকে টেক্কা দিতে চাইছে। কিন্তু মূল সমস্যার গভীরে যাচ্ছে না কেউই। এই অবস্থায় সাত বিধানসভায় যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তারা আবার সেই বেআইনি কয়লাতেই মদত দেবে বলে মনে করছেন বহু নাগরিক। ফলে খনি অঞ্চলে এমন আতঙ্কের মধ্যে বেঁচে থাকাটাই নাগরিকদের ভবিতব্য বলে ধরে নিচ্ছেন অনেকে।