কলকাতা ব্যুরো: লালগড় থানার হেফাজত থেকে ১৮ টি আগ্নেয়াস্ত্র চুরির চক্রটি শুধু মাওবাদী নয়, দেশের বহু জায়গায় জাল লাইসেন্স তৈরি করে বন্দুক-পিস্তল বিক্রি করেছে। অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমে মাওবাদীদের সেই অস্ত্র বিক্রির লিঙ্ক পায় পুলিশ। পরে ধৃত রবিকান্ত-র ল্যাপটপ ঘেঁটে এমন শ’খানেক লোকের তথ্য উদ্ধার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, তাতে তদন্তকারীরা নিশ্চিত, গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই চক্র বেআইনিভাবে অস্ত্র বিক্রির কারবার ছড়িয়ে ফেলেছে।
আবার এরইমধ্যে এসটিএফ ধৃত রবিকান্তকে নিয়ে হানা দিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের আম্বেরডি গ্রামে। মাওবাদী গড় বলে পরিচিত রাঁচি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দূরে দুর্গম এলাকায় এই গ্রাম। কয়েক ঘর গরিব আদিবাসীর বাস। মাওবাদী উপদ্রুত বলে পরিচিত হওয়ায় বিকেল চারটের পরে ওই এলাকা এড়িয়ে চলে স্থানীয় পুলিশও।যদিও ঝাড়খন্ড পুলিশের কমান্ডো নিরাপত্তা দিয়ে ডি দুয়েক আগে এ রাজ্যের এসটিএফের তদন্তকারীরা পৌঁছান সেই আম্বেরাডি গ্রামে। এখানকার এক যুবককে একটা জাল লাইসেন্স দিয়ে বন্দুক বেঁচেছিলো রবিকান্তের দল।
পুলিশ দেখে বেচারা সে যুবক তো আকাশ থেকে পরলেন। তিনি জানেও না জীবন বাঁচাতে গরু-হাঁস বেঁচে যে লাইসেন্সওয়ালা বন্দুক কিনেছিলেন, তা আসলে জাল। রবিকান্তকে দেখেই চিনতে পারলেন। এর থেকেই যে সেই বন্দুক কিনেছিলেন স্বীকার করলেন। এসটিএফ উদ্ধার করলো সেই বন্দুক। শুধু এই যুবকই নয়, তদন্তকারীরা জেনেছেন, বিহার-ঝাড়খণ্ড-উত্তর প্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যের গরিব আদিবাসী পরিবারের যুবকরাই এদের প্রথম টার্গেট। কম দামে লাইসেন্স সহ বন্দুক কিনতে পারলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ পাওয়া যায় সহজে। আবার তাতে বেতনও পাওয়া যায় বেশি সেই টোপ দিয়েই কোথাও চুরি করে রাজ্য থেকে সরিয়ে দিয়েছে বহু বন্দুক পিস্তল। সেই সমস্ত অস্ত্র চিরঞ্জীবি ওঝার মতো লোকের হাত ধরে পৌঁছে গেছে ভারতবর্ষের মাওবাদী জেলাগুলোতে। রবিকান্তরা জাল লাইসেন্স করে দিয়ে বিক্রি করেছে অপরাধী ও অনেক সময় সাধারন মানুষকেও। অনেকে না জেনেও কিনেছে, আসল ভেবে। এখন সেই শ’খানকে নামের তালিকা ধরে চুরি যাওয়া অস্ত্রের সব ফিরিয়ে আনার বড় চ্যালেঞ্জ এসটিএফের কাছে।।