কলকাতা ব্যুরো: শনিবার সকাল থেকে বুথে বুথে জমাট নিরাপত্তায় ভোট হচ্ছে রাজ্যের ৪৫ টি বিধানসভায়। এরইমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ভোট গ্রহণ কেন্দ্র থেকে দূরে গোলমাল চলছে সকাল থেকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এলাকায় বিরোধী ভোটারদের বুথে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সকাল থেকে বিধাননগরের শান্তিনগর, নয়া পট্টি এলাকায় বিজেপি এবং তৃণমূলের ভোটারদের সংঘর্ষ চলে। চলে ইট বৃষ্টি। একই ঘটনা ঘটে শান্তিপুরে l চাকদায় প্রকাশ্যেই রিভলভার নিয়ে দুষ্কৃতীদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। বেলা এগারোটাতেই নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে গিয়ে শীতলকুচির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করে আসে বিজেপি। বেলা ১১ টা পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ৩৩ শতাংশ।
গত কয়েক দফা ভোটে যে ছবি দেখা গিয়েছে তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে পঞ্চম দফাতেও। এই দফাতেই সবচেয়ে বেশি বিধানসভার ভোট একসঙ্গে হচ্ছে। বুথগুলিতে যাতে কোনরকম গোলমাল না হয়, সে কারণে সেই এলাকায় বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অথচ এলাকা যাতে কোন রকম গোলমাল না হয়, তা দেখার জন্য এবং কোথাও গোলমাল হলে দ্রুত সেখানে পৌঁছানোর জন্য পৃথক পৃথকভাবে বাহিনী গড়ে রেখেছে কমিশন। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘক্ষন ধরে দু পক্ষের লোকজন গোলমাল পাকাচ্ছে। যেমন এদিন সকাল থেকে বিধাননগর শান্তিনগর এলাকায় বড় রাস্তার ধারে ভিড় জমিয়ে ছিল বিজেপি এবং তৃণমূল বাহিনী। অভিযোগ, বিজেপির ভোটাররা বুথের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে, তাদের ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পাল্টা আক্রমণ করে বিজেপিও। একসময় দু দলই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। যদিও তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ বিজেপি এলাকায় গোলমাল পাকাচ্ছে।
ঘটনা চলতে থাকার মধ্যেই এলাকায় আসেন বিজেপির প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। তিনি আসার পরে বিজেপি বাড়তি অক্সিজেন পায়। তারপরে তারাও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। মহিলাদের রাস্তায় ফেলে মারতে দেখা যায়। বেশ কয়েকজনের চোট লাগে। সব মিলিয়ে প্রায় একঘন্টা বাদে আসে পুলিশ। ততক্ষনে গোলমাল চরমে উঠেছে। পুলিশ এসে লাঠি হাতে দুপক্ষকেই ধাওয়া করে এলাকা থেকে হঠিয়ে দেয়। এরো আধঘন্টা পরে আসেন তৃণমূলের প্রার্থী সুজিত বসু। তিনি অভিযোগ করেন সব্যসাচী দত্ত এসেই গোলমালে উস্কানি দিয়েছে।
আবার তার কিছুক্ষন পড়ে নয়া পট্টির তৃণমূল কাউন্সিলরকে বাড়ি থেকে ভোট দিতে বেরোনোর সময় সব্যসাচী দত্ত তাকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। পরে সেখানে পুলিশ পৌঁছলেও তাদের সামনেই দু পক্ষ বচসা জারি থাকে।
এদিন শান্তিপুরেও দেখা যায় গোলমাল হচ্ছে বুথ থেকে বেশ কিছুটা দূরে। সরাসরি বুথের সঙ্গে যে গোলমালের কোন যোগাযোগ নেই। অথচ ভোটের দিন যে এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে, তার পুরোটাই রয়েছে পুলিশের সরাসরি নজরদারিতে। সে ক্ষেত্রে একটি এলাকায় কি করে এত দীর্ঘ সময় ধরে গোলমাল চলে, সময়ে সেখানে পুলিশ পৌঁছয় না, সেই প্রশ্নই উঠছে। খোলা মাঠ ছেড়ে রেখে দিয়ে ভোটারদের বুথে পৌঁছতে না দেওয়া নিয়ে গোলমাল গত কয়েকটি দফায় উঠেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গোটা এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে ততটা উৎসাহী নয় কিনা, সে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।