কলকাতা ব্যুরো: আম্পান, করোনা- সব মিলিয়ে এবার এক আশঙ্কা ছিল চাষবাসের ক্ষেত্রেও। কারণ এটাই ছিল খরিফ মরসুমের ধান চাষের সময়। যার ওপর মোটের ওপর নির্ভর করে রাজ্যের সারা বছরের খাদ্যের জোগান। কৃষক পরিবারগুলোতে তো বটেই, শহুরে মানুষ, মিড ডে মিল, রেশনের চাল সবের জোগানই নির্ভরশীল খরিফের ধানের উৎপাদনের ওপর।
কিন্তু সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে দেখা যাচ্ছে, এই মরসুমে রাজ্যে ধানের ফলন হয়েছে যথেষ্ট ভালো। হাওড়া, হুগলি, বর্ধমানের মাঠে এখন দোল খাচ্ছে ধানের শিষ। হুগলির চাষি আমিনুল গাজি কিংবা আইনুল হকরা জানালেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ধান পেকে যাবে। তারপর তা ঘরে তোলার পালা। মাঠ দেখেই মালুম হচ্ছে, এবার ভালো ফলন মিলবে।
এবার দেবী দুর্গা এসেছিলেন দোলায়, গমন করেছেন গজে। দোলায় আগমন মানে মড়ক আর গজে গমন মানে শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা।প্রতীকিই হোক কিংবা লোক বিশ্বাস, তাও যেন মিলে যাচ্ছে বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে। এবার ভালো চাষ হবার নেপথ্যে কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। প্রথমত এবার ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। তাই সেচের জলের ঘাটতি হয়নি। দ্বিতীয়ত, লক ডাউনের কারণে বন্ধ ছিল অনেক ধরনের কাজ। ভিন রাজ্য থেকে রাজ্যে ফিরেছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। তাই সব মিলিয়ে শ্রমিকের সমস্যা হয়নি। তৃতীয়ত কলকাতাই হোক বা জেলা, শহরাঞ্চলে করোনার প্রকোপ যে পরিমামে দেখা গিয়েছে, গ্রামে সেই প্রকোপ ছিল তুলনায় অনেক কম। তাই কাজে সমস্যা হয়নি।
এরাজ্যে বছরে ধানের উৎপাদন হয় প্রায় ১৯০ লাখ মেট্রিক টন। তার বেশিরভাগ চাষটাই হয় খরিফ মরসুমে বর্ষার জলে। রাজ্যের কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আম্পানে বিশেষত সুন্দরবন এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী যে এলাকা গুলিতে নোনা জল ঢুকে গিয়েছিল, সেই এলাকাগুলিতে ভালো চাষ হয়নি। এই মরসুমে শুধুমাত্র ধানই নয়, সব্জির ও ভালো ফলন হচ্ছে। ফের সুদিনের আশায় দিন গুনছেন চাষিরা।