কলকাতা ব্যুরো: রাত পোহালেই কলকাতার একাংশ সহ মোট পাঁচ জেলার ৩৪ টি বিধানসভায় সপ্তম দফার নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে। সুস্থ ভাবে করোনা বিধি মানানোর সঙ্গেই আইন-শৃঙ্খলা সামাল দিতে সপ্তম দফায় মোট ৭৯৬ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদার একাংশ মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান এবং দক্ষিণ কলকাতায় এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যদিও এর মধ্যে জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জ দুই প্রার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় ৩৬ টির বদলে আপাতত ৩৪ টি আসনে নির্বাচন হবে। আগামী ১৬ মে ওই দুটি আসনে নির্বাচন করে ১৯ মে তার ফল প্রকাশ করা হবে।
সপ্তম দফায় নজরকাড়া কেন্দ্র হিসেবে ভবানীপুর অবশ্যই সবার নজরে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রে এবার প্রার্থী রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী। তার বিপরীতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ দক্ষিণ দিনাজপুরে বালুরঘাটের বিজেপির প্রার্থী অর্থনীতিবীদ অশোক লাহিড়ী এবার এবার ওই কেন্দ্রের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর বাইরে কলকাতা বন্দর এলাকায় তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী ববি হাকিম, আসানসোল মলয় ঘটক, পাণ্ডবেশ্বর দল বদলে বিজেপিতে যাওয়া জিতেন্দ্র তিওয়ারি, বালিগঞ্জ বর্ষীয়ান সুব্রত মুখার্জি, ফুয়াদ হালিম বা কোলিয়ারি এলাকায় বামেদের তরুণ মুখ জেএনইউ সাধারণ সম্পাদক ঐশী ঘোষও অবশ্যই রয়েছেন।
গত কয়েকটি দফার থেকে সপ্তম দফায় নির্বাচন কমিশনের আরো বড় চ্যালেঞ্জ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গেই করোনা বিধি রক্ষা। যদিও এদিন আসানসোলে ডি সি আর সি তে ন্যূনতম করোনা বিধি না মানার অভিযোগের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে এক ভোট কর্মী শিক্ষিকার মৃত্যুতে ফের কাঠগড়ায় উঠেছে কমিশন। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে একদিকে পরিকাঠামোগত ত্রুটি, অন্যদিকে করোনা বিধি না মানা নিয়ে কমিশনকেই দায়ী করছেন ভোট কর্মীরা। এই অবস্থায় রাত পোহালেই সপ্তম দফায় প্রায় ৮৬ লক্ষ ভোটার কতটা দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক ব্যবহার করে ভোট দেবেন, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এদিন ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজারের বেশি মানুষ রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। সোমবার ভোট হয়ে যাওয়ার পর সেই সংখ্যাটা একদিনে কতটা বাড়ে সেদিকে এখন সন্দিহান হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই দফায় ২৮৪ জন প্রার্থী ৩৬ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই দফায় শুধুমাত্র বুথে ভোটের জন্য ব্যবহৃত হবে ৬৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বর্তমানে রাজ্যে ভোটের জন্য মোট ১০৭১ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর ১৫৪ কোম্পানি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ১০৮ কোম্পানি, জঙ্গিপুর পুলিশ ডিস্ট্রিক ১০২ কোম্পানি, কলকাতায় ৬৩ কম্পানি, মালদায় ১২২ কোম্পানি, মুর্শিদাবাদে ১০২ কোম্পানি, এবং রায়গঞ্জ পুলিস ডিস্ট্রিকের ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে কোন রকম ভাবেই অপ্রীতিকর ঘটনা বা কোনো অশান্তি এবারে সহ্য করবে না নির্বাচন। যদি কোন রকম ভাবে অশান্তি ছড়ায় তাহলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কমিশন।