কলকাতা ব্যুরো: একে করোনা। তার ওপর গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো গালওয়ান সীমান্তে গোলমালে চরমে উঠল চিনের সঙ্গে বিরোধ। আর তাতেই কিছুটা ব্যবসা বাড়ল দেশজ কুটির শিল্পে। এ যেন মোদির আত্মনির্ভরতার ডাক বাস্তবেই কার্যকর করিয়ে দিতে অজান্তেই পাঠ করে দিল শিজিংপিংয়ের দেশ। ধান ভাঙতে শিবের গীত নয়। বাস্তবেই ভারতে এত খারাপ সময়ের মধ্যেও কিছুটা ভালো খবর স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও অঙ্গনওয়ারি কর্মীদের জন্য। সৌজন্যে রাখী উৎসব।
ভারতে রাখী বা রক্ষাবন্ধনে বিপুল ব্যবসা হয় রাখীর। এই ব্যবসায় বিশাল একটা অঙ্কের লগ্নি হয় রাখি শিল্পে। যার বেশিরভাগটাই আসে চিন থেকে। এ বছর ৩ আগস্ট রাখী বন্ধন উৎসব। কিন্তু করোনার আঁতুরঘর নিয়ে আগেই চিন সম্পর্কে ভারতবাসীর বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল। তা আরও তিক্ত করে দেয় গলোয়ানের গোলমাল। ফলে চিন থেকে জিনিসপত্র আমদানিতে প্রবল আপত্তি তুলেছেন এ দেশের ব্যবসায়ীদের বড় অংশ। আর তার জেরে লক ডাউন আবহেই রাখী উৎসবে এবার সুন্দর, ঝকঝকে আর সস্তার চিনের রাখী মেলার সুযোগ প্রায় নেই। সেই বাজার এবার ধরছে দেশীয় রাখী। রাখী তৈরির কাজই এখন করছেন গ্রাম-শহরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মহিলারা।
রাখীর কত টাকার ব্যাবসা হয় দেশে? কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স বা সিএআইটি-র হিসেব বলছে, বছরে ছ’হাজার কোটি টাকার রাখীর ব্যাবসা হয় দেশে। যার মধ্যে প্রায় চার হাজার কোটির রাখী আসে চিন থেকে। এবার সেই আমদানি পুরোটাই বন্ধ।
রাখীর কত টাকার ব্যাবসা হয় দেশে? কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স বা সিএআইটি-র হিসেব বলছে, বছরে ছ’হাজার কোটি টাকার রাখীর ব্যাবসা হয় দেশে। যার মধ্যে প্রায় চার হাজার কোটির রাখী আসে চিন থেকে। এবার সেই আমদানি পুরোটাই বন্ধ। একদিকে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে এখনো বিচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক যোগাযোগ।
চিনে তৈরি কম দামের কিন্তু আকর্ষণীয় সেই রাখীর একটা বড় অংশ আসে কলকাতায়। এখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু কলকাতা নয়, এ রাজ্য ছুঁয়ে তার কিছুটা চলে যায় উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে। এবার চিনের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ছোট লগ্নিকারীরাই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি রাখীর উপর ভরসা রাখছেন। তবে বর্তমানে সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তাতে পুলিশ, চিকিৎসক, নার্সের মতো যারা কাজের জন্য বেরোতে বাধ্য হচ্ছেন তার বাইরে ব্যবসা খুব ভালো হবে না বলে এখন থেকেই প্রমাদ গুনছেন ব্যবসায়ীরা।
রাখীর বড় ব্যবসা করা বাগরি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই পরিস্থিতি অবশ্য দু’বছর আগেও দেখতে হয়েছে আমাদের। সেবার বছরের প্রায় এই সময়েই ডোকলামে রাস্তা তৈরি নিয়ে চিনের সঙ্গে গোলমালের পরেও কিছুদিন বাণিজ্য বন্ধের মধ্যেই ছিল এমন রাখীবন্ধন। সেবারেও রাখীর বাজারে দেশজ শিল্পের উপরেই ভরসা রাখতে হয়েছিল ব্যবসায়ীদের।