কলকাতা ব্যুরো: করোনার কারনে কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে আগের মতো শোভাযাত্রা করা যাবে না। বৃহস্পতিবার একথাই সাফ জানিয়ে দিলো হাইকোর্ট। তবে রীতি বজায় রাখতে পুজো কমিটিকে প্রতীকী শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া যায় কিনা, আর যদি তা দেওয়া হয়, কিভাবে সেটা করা যায় তা বিবেচনার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিলো হাইকোর্ট।

এক জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। কোভিড বিধির কথা মাথায় রেখেই উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ফলে চারদিন রাতভর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় আলো দেখার সুযোগ থাকলেও, অন্যান্য বছরের মতো বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি কৃষ্ণনগরের পুজোর ভাসানেও জারি থাকছে একই নিয়ম।

তবে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসান নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। বুধবার জগদ্ধাত্রী পুজোয় পুরনো ঐতিহ্য ফেরানো নিয়ে জনতার দাবি প্রশাসন মেনে না নেওয়ায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধ করা হয়। আর এই অবরোধের মাঝে আটকে পড়ায় অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে বেঘোরে প্রাণ হারায় মালদহের বছর সাতের শিশু। এই মর্মান্তিক ঘটনাকে সামনে রেখে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে।

সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতিরা জানান, রীতিনীতি, ঐতিহ্য বজায় থাকুক জগদ্ধাত্রীর ভাসানে। কিন্তু নিয়মরক্ষাটুকুই থাকুক। বড়সড় শোভাযাত্রা নয়, বিসর্জন প্রতীকী করা হোক। জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের সময় চন্দননগর বা কৃষ্ণনগরের যে শোভাযাত্রার ছবি দেখা যায়, তা ভয়ংকর। কোভিডবিধি বজায় রাখতে গেলে এ ধরনের শোভাযাত্রায় অনুমতি দেওয়া সম্ভব না। তাতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই প্রতীকীভাবে সবকিছু হোক। এই বিষয়ে সবরকম ব্যবস্থা নিক রাজ্য। 

করোনা আবহে গত বছরের মতো এ বছরও দুর্গাপুজো, কালীপুজো ও অন্যান্য উৎসব হয়েছে কোভিডবিধি মেনে। তাই জগদ্ধাত্রী পুজোও সেই একইরকমভাবে করার দাবি উঠেছিল। তবে বুধবার বিসর্জনের ঐতিহ্য ফেরানোর দাবিতে অবরোধের জেরে শিশুমৃত্যুর মতো নৃশংস ঘটনা সেই দাবি আরও উসকে দেয়। ফলে এবার জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনে ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা দেখা যাবে না। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version