কলকাতা ব্যুরো: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ম্যারাথন সিবিআই জেরার মুখোমুখি পরেশ অধিকারী। শুক্রবার একটানা প্রায় ১০ ঘণ্টা তাঁকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। কার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতা? সেই তথ্যের খোঁজে জোর কদমে তদন্ত শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। শনিবার সকাল এগারোটায় নিজাম প্যালেসে ফের পরেশ অধিকারীকে তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা পরেশ অধিকারীর কাছ থেকে জানতে চান কীভাবে চাকরি হল তাঁর মেয়ে অঙ্কিতার। মন্ত্রীকন্যাকে চাকরি পাওয়ার নেপথ্যে আরও বহু লোক জড়িত রয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সে কারণেই মধ্যস্থতাকারীর খোঁজে তৎপর সিবিআই।
উল্লেখ্য, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় শিক্ষাদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। অভিযোগ, মেধা তালিকায় না থেকেও মন্ত্রীর মেয়ে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। ববিতা সরকার নামে এক পরীক্ষার্থী মামলা করেছিলেন। ববিতার দাবি, তাঁর চেয়ে নম্বর কম ছিল মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। তারপরেও নিয়োগপত্র হাতে পাননি ববিতা। অথচ ২০১৮ সাল থেকে মেখলিগঞ্জের একটি স্কুলে চাকরি করছেন অঙ্কিতা। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন চাকরিপ্রার্থী ববিতা। সেই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। বর্তমানে চাকরি খুইয়েছেন মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতা। দুই কিস্তিতে বেতনের টাকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের।
মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে নিজাম প্যালেসে তাঁকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তবে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান পরেশ অধিকারী। বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটের মধ্যে সিবিআই দপ্তরে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে ডেডলাইন পেরিয়ে গেলেও হাজিরা দেননি রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। এরপর সিবিআই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। ওইদিনই সন্ধেয় কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন পরেশ। বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী সোজা নিজাম প্যালেসে পৌঁছন তিনি। সেদিনও জেরা করা হয় তাঁকে।
এরপর বৃহস্পতিবার প্রায় তিন ঘণ্টা এবং শুক্রবার একটানা প্রায় দশ ঘণ্টা জেরা করা হয় মন্ত্রীকে। শনিবারও ফের পরেশ অধিকারীকে তলব করা হয়েছে। সকাল এগারো নাগাদ নিজাম প্যালেসের হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। মন্ত্রীকে জেরা করে সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।