কলকাতা ব্যুরো: আর ঠেকানো গেল না লক ডাউন। রাজধানী দিল্লিতে আজ রাত থেকেই লকডাউন ঘোষণা করা হল। আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই নির্দেশ প্রাথমিকভাবে বলবৎ থাকবে। রাজস্থানেও লক ডাউন হচ্ছে। দিল্লি তে দিনে প্রায় ২৫ হাজার ৪০০ জনের সংক্রমণ হওয়ায় আর কোনো ঝুঁকি নিলোনা কেজরিওয়াল সরকার। এ রাজ্যের কেয়ারটেকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সোমবার থেকে আরও কিছুটা নড়েচড়ে বসল। আগামীকাল থেকে স্কুলগুলির গরমের ছুটি দিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও এক গুচ্ছ পদক্ষেপ করোনা ঠেকা তে করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সেই ঘোষণার আগে রাজ্যপাল সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুরে মালদা থেকে মমতা বন্ধপাধ্যায় জানান, এখন ১১ হাজার কোভিড বেড রয়েছে। নতুন ২০০ নতুন বেডের ব্যাবস্থা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘুরছে। তাদের করোনা পরীক্ষা জরুরী বলেও দাবি মমতার।
রাজ্যপাল এদিন সকালে ট্যুইট করে জানান রবিবারে তিনি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বর্তমান রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য চেয়ে ছিলেন। সূত্রের খবর এদিন মুখ্যসচিব রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন। এদিন বিজেপির রাজ্য অফিসে বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ অভিযোগ করেন, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মী নিয়োগ না হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর কাটগড়ায় তোলেন তৃণমূলের সরকারকে।
রাজ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সাড়ে আট হাজার মানুষ নতুন করে সংক্রামিত হওয়ায় সরকারের টনক নড়লো। যদিও নির্বাচন কমিশন আছে সেই তিমিরেই। এর আগে সিপিএমের তরফে কোন বড় সভা করা হবে না বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু রবিবার ভোট প্রচারে যে মিছিল বের হয় সেখানে খুব একটা করোনা বিধি মানা হয়েছে তা সিপিএমের অতি বড় বন্ধুও মানবে না।
এরইমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার তার দ্বিতীয় সভা করেন উত্তরবঙ্গের হেমতাবাদে। আগে রবিবার মমতা জানিয়েছিলেন কলকাতায় একমাত্র তিনি একটি সভা করবেন। তাছাড়া তিনি আর কলকাতায় কোন বড় সভা করবেন না। দলের তরফে ছোট ছোট সভা করা হবে।
রাজনৈতিক প্রচার সভা নিয়ে সারাদেশে রাজ্য সম্পর্কে বিরূপ সমালোচনা শুরু হলেও তাতে অবশ্য পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপির বর্ষিয়ান নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহের পাল্টা যুক্তি, ভোট প্রচারে যদি করোনা বারে সে ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রে এত লোক আক্রান্ত হচ্ছে কিভাবে? বিজেপির এই শীর্ষ নেতার যুক্তি খন্ডন না করেও রাজ্যের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, প্রচার চালিয়ে যাওয়ার জন্যই বিজেপি নিজের মত করে যুক্তি তৈরি করছে। একথা ঠিক যে শুধু প্রচারে যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তা নয়, কিন্তু সেটা সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার একটা অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে নাগরিকদের করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক এবং দূরত্ব মানতে আগে থেকে সতর্ক করা হলেও, তেমন ভাবে কেউ তা পাত্তা না দেওয়া তেই বিপর্যয় এত দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।