কলকাতা ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে ময়নাতদন্ত করতে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তির ছুড়ে দিলেন সেচ দপ্তরের দিকে। কেন বছর বছর এত নদীর বাঁধ ভাঙছে, তা নিয়ে এবার তদন্তের নির্দেশ দিলেন নিজের সরকারকে। আর এক্ষেত্রে সেচ দপ্তরের বিরুদ্ধে তদন্ত মানে একদা তার দুই ঘনিষ্ঠ, বর্তমানে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী ও রাজিব ব্যানার্জি দিকেই যে আঙ্গুল তোলা, ঠারেঠোরে তা মানছেন রাজ্যের শাসক দলের অনেক নেতাই।
বৃহস্পতিবার নবান্নে ঘূর্ণিঝড়ের ময়নাতদন্ত করতে বসে মমতা নিজেই প্রশ্ন তোলেন এত বাঁধ ভাঙ্গা নিয়ে। সেচ দপ্তরের সচিবের কাছে প্রায় কৈফিয়তের ঢঙে বিভিন্ন নদীর নাম করে সেগুলির বাধ কেন এত তাড়াতাড়ি ভেঙে গেল, তার কৈফিয়ৎ চান। প্রায় বিরক্তির সঙ্গে তার বক্তব্য, বিনা পয়সায় কেউ কাজ করছে না। সে যে কোন কোম্পানি হোক না কেন, তাহলে কেন কাজ করার পরেই একটা ঝড় আসলে বাধ ভাঙবে!
এর পরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, গতবছর আম্পানের পর বাধ বাধার কাজ হলেও এক বছরের মধ্যে সেগুলি ভেঙ্গে যাওয়ায়। তিনি বলেন, দীঘা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং সুন্দরবনের দুই পরগনায় কি করে এত দ্রুত বাধ ভাঙছে তার তদন্ত করে দেখতে হবে।
এ ব্যাপারে অর্থ দপ্তরের সচিবকে তিনি আরো কঠোর হতে নির্দেশ দেন। তার বক্তব্য, সেচ দপ্তরের টাকা বরাদ্দ করার আগে ভালো করে খতিয়ে দেখে নিতে হবে আগের কাজ ঠিকমতো হয়েছে কিনা।

প্রসঙ্গত রাজ্যের তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সাল থেকে পরবর্তী প্রায় আট বছর সেচ দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন রাজিব ব্যানার্জি। ২০১৮ সালের পরে তাকে বনদপ্তর এর দায়িত্ব দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বিধানসভা ভোটের আগে মন্ত্রিত্ব ছাড়ার দিন পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে শুভেন্দু অধিকারী উল্টে সরকারকেই তোপ দেগেছেন। আর রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সেচ দপ্তরে যে কাজকর্ম ঠিকঠাক হয় না, তা সব সরকারই জানে। আর বছর বছর বাঁধ তৈরি আর বাধ ভেঙ্গে যাওয়া এটা একটা রুটিন হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ঘটনাচক্রে তৃণমূল সরকারের আমলের রাজ্যের দুই মন্ত্রীই বর্তমানে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। ফলে এখন গত এক দশকের কাজের তদন্ত করলে, সে ক্ষেত্রে দায়ভার আগের দুই মন্ত্রীর ঘাড়েই যাবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version