থিয়েটারে রিলিজ করেছে গঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি ২৫ শে ফেব্রুয়ারি । সজ্ঞয় লীলা বনসালী পরিচালিত গঙ্গুবাঈ হুসেন জায়দির লেখা 'মাফিয়া কুইন অফ মুম্বই' এর একটা অধ্যায় যেখানে যৌনকর্মী গাঙ্গুর জীবন তুলে ধরা হয়েছে। ছবি কতটা গঙ্গুবাঈের জীবনের আয়না হয়ে উঠতে পেরেছে তা বলা কঠিন কারন বনসালীর ঝাঁচকচকে সেটে আসল গঙ্গুবাই অনেকটাই ঢাকা পরেছে ।

সিনেমা ভালবাসত গঙ্গা তাঁর দু চোখ ভর্তি স্বপ্ন সে নায়িকা হবে। গুজরাতের কাথিয়াওয়াড়ের এক ব্যারিস্টারের মেয়ে গঙ্গা পনেরো বছর বয়সি মেয়ে। সে প্রেমিক রামনিকের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল স্বপ্নের শহর মুম্বইয়ে নায়িকা হবে বলে। স্বপ্নে ও প্রেমে বিভোর গঙ্গা বোঝেনি রামনিকের বিশ্বাসঘাতকতা ।রামনিক তাকে বিক্রি করে দেয় যৌনপল্লিতে ;গঙ্গা থেকে সে হয়ে যায় এক যৌনকর্মী গঙ্গু । সেখান থেকে পাঠান লালা ছত্রছায়াই থেকে সে হয়ে ওঠে মাফিয়া কুইন গঙ্গুবাঈ। সে বারবার প্রশ্ন তুলেছে সমাজের পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে। সে নিজের লোকের ভালোর জন্যে রাজনীতিতে নেমেছে ,বিসর্জন দিয়েছে নিজের প্রেম ভালোবাসা ছোট ছোট খুশি ।

গঙ্গুবাঈ চরিত্রে আলিয়া ভাট (#AliaBhatt) অনেক খেটেছেন সেটা বোঝা যায় কিন্তু হাইফাই মেকআপের আড়ালে বোধহয় বাস্তব জীবনের গঙ্গুবাঈ হারিয়ে গেছে । ৫০-৬০ এর দশকের মুম্বই শহরের বাস্তবতা হরিয়ে গেছে কৃত্রিম সেটের ব্যাপকতায় । লালার চরিত্রে অজয় দেবগন বেশ নজর কারতে পারবে দর্শকদের । অন্যদিকে নিউকামার শান্তনু মহেশ্বরীর অভিনয় আরো ভালো হতে পারত, তার কাছে সুযোগ ছিল স্কিন টাইমিং এর । রাজিয়া বাঈয়ের চরিত্রে বিজয় রাজ প্রত্যেকবার মতো দূর্দান্ত ,তবে তার আর খানিকটা অভিনয় থাকলে ভালো হত । সাংবাদিকের অভিনয়ে জিম সার্ভের অভিনয় মাঝামাঝি পদ্মাবত্যের মালিক কাফুর মতো নয় ।
শীলা মাসির চরিত্রে সীমা পাহওয়ার তার অভিনয় দক্ষতা দেখাতে পারেন নি, বলা ভালো তাকে দেখাতে দেওয়া হয়নি । ছবির অন্য অভিনেতাদের অভিনয় বেশ ভালো বিশেষ করে গঙ্গুর বন্ধু কামলীর চরিত্রে ইন্দীরা তেওয়ারি ।

বনসালীর ছবির স্ট্রং পয়েন্ট গান ; সেই গান আগের তার ছবিরগুলো মতো দমদার নয় । শ্রেয়া ঘোষালের গলায় ‘জব সাইয়া’ মোটামুটি । নিতি মোহনের গলায় ‘মেরি জা’ গানের কোরিওগ্রাফির দারুন । ছবির ডায়লগ বেশ বোল্ড মনের মধ্যে একটু হলেও দাগ কাটবে। তবে মাফিয়া কুইন গঈুবাঈের জীবনী এই ছবি হয়ে উঠতে পারেনি ।ছবিতে তৎকালীন সময়ের পলিটিক্যাল ইমেজে গঙ্গুবাঈ দেখা যাবে না। এখনে যেন তিনি হিরোইন ।ছবির মধ্যে যৌনপল্লীর ও যৌনবৃত্তির বাস্তবতা নেই বা হয়ত দেখানো যায়নি ।আজাদ ময়দানের গঙ্গুবাঈ-র সেই ভাষণ দুবার শুনতে ইচ্ছা হবে।কিন্তু চরিত্র এবং গল্প বলার ভঙ্গি বড্ড মেলোড্রামাটিক। কোন ব্যাক্তিত্বের জীবনী নিয়ে সিনেমা করতে গিয়ে সেই ব্যক্তিত্ব কে কি ফ্যান্টাসায়িস করা যায়? বনসালী প্রত্যেকবার এইটাই করেন যেমন পদ্মাবতের আলাউদ্দীনের চরিত্র ।

এবার প্রশ্ন এই ছবি থিয়েটারে গিয়ে দেখবেন কি না ..? উত্তর হ্যাঁ আবার না ও । যদি আলিয়া ভটের ফ্যান হন তবে নিশ্চয়ই হলে গিয়ে দেখবেন তিনি খেটেছেন অনেক । কিন্তু যদি গঙ্গুবাঈ-এর জীবনীর বাস্তবতা খোঁজার জন্যে যান তবে আপনি হতাশ হবেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version