কলকাতা ব্যুরো: এসএসসি দুর্নীতি মামলা এই মুহূর্তে আলোচনার একেবারে তুঙ্গে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত যতই এগোচ্ছে, ততই বেরিয়ে আসছে কেলেঙ্কারির নতুন নতুন সূত্র। রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারির পর তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক সূত্র হাতে এসেছে বলে দাবি ইডির।
তবে এই মুহূর্তে সেই ক্লু থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে নথিতে ইডির প্রখর নজর, তা হল জলপাইগুড়ির এক দলীয় বিধায়কের লেটার প্যাডে লেখা এক ‘সুপারিশপত্র’। এসএসসি গ্রুপ ডি বিভাগে নিয়োগের জন্য ৬ বছর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো পাঁচ প্রার্থীর নাম সুপারিশ করেছিলেন ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। কিন্তু তাঁর দাবি, একজনেরও চাকরি হয়নি। তদন্তকারীদের স্ক্যানারে এখন তাই অনন্তদেব অধিকারীও।
২০১৬ সালে শেষবার রাজ্যে এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল। সেই নিয়োগে অস্বচ্ছতা, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ, আন্দোলনের জেরে হাই কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের কাজ শুরুর পরই প্রকাশ্যে এসেছে হেভিওয়েট যোগ। ২১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পার্থবাবু ও অর্পিতাকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। তারই একটি ময়নাগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীর লেটার প্যাডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লেখা সুপারিশের চিঠি।
এনিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক তথা ময়নাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগে রাজ্যের প্রতিটি জেলার বিধায়কদের কাছে পাঁচজন করে চাকরিপ্রার্থীর নাম তালিকা চেয়ে পাঠিয়ে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে নিজের বিধানসভা এলাকার পাঁচজন চাকরিপ্রার্থীর নাম পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলেন ময়নাগুড়ি তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর দাবি, সুপারিশ করা পাঁচজনের মধ্যে একজনেরও চাকরি হয়নি।
তদন্তকারীরা বলছেন, এই বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির একটি সুতো মাত্র ময়নাগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি থেকে যা যা উদ্ধার হয়েছে, তা থেকে যে আরও বড়সড় সূত্র মিলবে অতি দ্রুতই। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দপ্তরে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়কে জেরা চলছে।
সূত্র বলছে, যাঁরা বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন, সেই অফিসাররাই রয়েছেন জিজ্ঞাসাবাদে।