কলকাতা ব্যুরো: আর কয়েক ঘন্টা পরেই হাইকোর্টে দুর্গাপুজোয় দেওয়া নো এন্ট্রি নির্দেশে ছাড় পেতে আবেদন করছে দুর্গাপুজো গুলোর সমন্বয় কমিটি। কিন্তু বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের তাতে মন গলে কিনা, সে ব্যাপারে সংশয় রয়েছে রাজ্যের বহু আইনজীবীরা। কেননা বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বিতীয় সিনিয়র বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে করা ধাঁচের মানুষ হিসেবেই চেনেন আইনজীবীরা। তাই যে পরিস্থিতিতে তিনি রায় দিয়েছেন, তাতে আবেদন করলেও কতটা সুরাহা মিলবে তা নিয়ে ঘোর সংশয় বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত থাকা সকলের।
যদিও ফোরাম ফর দুর্গোত্সবের কর্তারা আশাবাদী, সামান্য হলেও কিছু ছাড় পাওয়া যাবে হাইকোর্ট থেকে। তাই তারা রিভিউ পিটিশন দাখিল করবেন। তাদের বক্তব্য, পুজো শুরুর মাত্র দুদিন আগে এমন কঠোর নিয়ম হলে, এতদিনের খাটাখাটনি বিফল হবে। আবার সারা বছর ধরে মানুষ যে উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকে, তারাও তাতে যোগ দিতে নে পেরে হতাশ হবেন। তাই সবদিক বিবেচনা করে আরও একটু ছাড় দেওয়ার জন্য তারা আবেদন করছেন হাইকোর্টে।
এবার করোনা আবহে রাজ্য সরকার আগেই গাইডলাইন দিতে গিয়ে খোলা মন্ডপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল। ফলে এবার বড়, ছোট সব পুজোর উদ্যোক্তাই একেবারে দূর থেকে যাতে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা করা যায়, সেই মতই এগিয়েছিলেন। এবার হাইকোর্ট সেই মণ্ডপ থেকে ১০ ফুট দূরত্বে ব্যারিকেড দেওয়ার কথা বলায়, এতে সুরাহা কী হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছেন পূজার উদ্যোক্তারা। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী, এবার খোলা হওয়ায় এমনিতেই অনেক দূর থেকেই দর্শক দেবী দর্শন করতে পারতেন। আদালত বললে, উদ্যোক্তারা স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে তেমন দূর থেকেই দর্শকদের ঠাকুর দেখিয়ে সরিয়ে দেবেন। কিন্তু এত কঠোর ভাবে কোন দর্শক মণ্ডপে ঢুকতে পারবে না এই নিদান দিলে তা মানানো কষ্টকর হবে বলে তাদের মত। দরকার হলে ২০ জন করে একবারে দর্শক ঢোকার অনুমতি চান উদ্যোক্তারা।
যদিও কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশে যথেষ্ট খুশি নাগরিকদের একটা বড় অংশ। বিশেষ করে চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা কিন্তু মনে করছেন সংক্রমণ কিছুটা হলেও ঠেকানোর ক্ষেত্রে এই রায় একমাত্র ইতিবাচক দিক। একদিকে যেভাবে রাজ্য সরকার ধীরে ধীরে অন্যান্য বছরের মতো পুরো দুর্গাপূজা টাকেই স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছিল, সেখানে এমনকি শেষ মুহূর্তে কম লোক নিয়ে জলসা করার ও ছাড় দিয়েছে সরকার, যা বড় ক্ষতির জন্য যথেষ্ট। কিন্তু হাইকোর্ট এই কড়া পদক্ষেপ করায় অন্তত কিছু মানুষ ঠাকুর বা মন্ডপ দেখা যাবে না বলে ধরে নিয়েও বেরোবেন না। ফলে সেই ভিড় তত কমবে বলে আশা করছেন সাধারণ নাগরিকরা।