কলকাতা ব্যুরো: নতুন অসাংবিধানিক (Unparliamentary) শব্দের তালিকা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় বিরোধীদের ভাষা নিয়ন্ত্রণে (Unparliamentary) কড়া পদক্ষেপ করেছে সংসদ। ১৮ জুলাই শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। তার আগে দীর্ঘ অসাংবিধানিক শব্দের (Unparliamentary) তালিকার একটি বই প্রকাশ করেছে লোকসভা সেক্রেটারিয়েট। এবার থেকে এই শব্দগুলি সংবিধানের কোনও কক্ষেই ব্যবহার করতে পারবেন না সাংসদেরা।
ইতিমধ্যেই প্রতিবাদে টুইট করেছেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর সঙ্গে গলা মেলালেন শীতকালীন অধিবেশনের শেষে সাসপেন্ড হওয়া ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি টুইটে লিখেছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদদের কণ্ঠরোধের নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এবার সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ‘অ্যাশেমড’, ‘অ্যাবিউসড’, ‘বিট্রেড’, ‘কোরাপ্ট’, ‘হিপোক্রেসি’, ‘ইনকমপিটেন্ট’-এর মতো এই প্রাথমিক শব্দগুলো আমাদের বলতে করতে দেওয়া হবে না। আমি এই সব শব্দগুলো ব্যবহার করব। আমাকে সাসপেন্ড করুন। আমি গণতন্ত্রের জন্য লড়ছি।
উল্লেখ্য, ২০২১-এ গ্রীষ্ম, বাদল এবং শীতকালীন অধিবেশনে প্রায়শই সংসদের দুই কক্ষ বিরোধীদের সমালোচনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। মাঝে মাঝেই অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করতে হয়েছিল। বাদল অধিবেশন চলাকালীন কক্ষের মধ্যে হিংসাত্মক আচরণের অভিযোগে শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই ১২ জন বিরোধী দলের সাংসদকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়। সেই তালিকায় ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন এবং শান্তা ছেত্রী। একুশের শীতকালীন অধিবেশনের পুরো সময়টাই তাঁরা সাসপেন্ড ছিলেন। এর বিরুদ্ধে লোকসভার সামনে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় সামিল হন সাসপেন্ড হওয়া সাংসদরা।
গত বছর শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৩ ডিসেম্বর। তার আগে ২২ তারিখই অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। তার একদিন আগে অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর সাসপেন্ড হন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর বিরুদ্ধে অসংসদীয় আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। নির্বাচন আইন সংশোধনী বিল ২০২১ নিয়ে আলোচনা চলাকালীন রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন সস্মিত পাত্রর দিকে রুলবুক ছুড়ে মারেন তিনি। তারপরই শীতকালীন অধিবেশনের বাকি সময় থেকে সাসপেন্ড করা হয় ডেরেককে।
এই নিয়ে টুইটারে প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল সাংসদ লিখেছিলেন, শেষবার যখন আমি রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হয়েছিলাম তখন বুলডোজার চালিয়ে কৃষি আইন পাস করিয়েছিল সরকার। আমরা সবাই জানি এরপর কী হয়েছিল। আজ সংসদকে উপহাসের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে একইভাবে বুলডোজার চালিয়ে নির্বাচন আইন সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়েছে। আশা করছি এই আইনও দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। ফের সাসপেনশনের ভয় উড়িয়ে হুমকি রাজ্যসভার সাংসদের।