কলকাতা ব্যুরো: শটকুয়া ইনস্টিটিউশনে সলমন রুশদির অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত ঢিলেঢালা ছিল। যে বিশিষ্ট লেখককে এখনও প্রাণনাশের হুমকির মধ্যে সর্বদা থাকতে হয়, যাঁর জন্য সব সময় কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকে, তাঁর অনুষ্ঠানে কেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা এত কম ছিল? তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, প্রেক্ষাগৃহে ঢোকার সময় দর্শকদের ব্যাগ পরীক্ষা হয়নি, ছিল না কোনও মেটাল ডিটেক্টরের বালাই। যে যখন পারছে, ঢুকছে। নিরাপত্তারক্ষীরা কাউকে পরীক্ষা পর্যন্ত করেননি বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যাঁর মাথার দাম কয়েক লক্ষ ডলার, স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাসের লেখক রুশদির অনুষ্ঠানে কেন নিরাপত্তার এই ছন্নছাড়া অবস্থা, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর অনুগামীরা।

বেলা ১১ টার কিছু আগে (ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা) রুশদি যখন সাক্ষাতকারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, ঠিক তখনই বছর চব্বিশের এক যুবককে আচমকা মঞ্চে উঠতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে সেই যুবক ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর গলায় ঘনঘন কোপাতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় রুশদি মাটিতে পড়ে যান। পরে অবশ্য ওই যুবককে ধরে ফেলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কেন এই আচমকা হামলা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ধৃত যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ওই এলাকাটি অত্যন্ত নিরাপদ। প্রতি গ্রীষ্মে লেখক, শিল্পীরা এখানে জমায়েত হন। চলে নানা আলোচনা, খাওয়াদাওয়া। আজ পর্যন্ত এখানে লেখক, শিল্পীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হয়নি। সেখানে কী করে এই ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছেন না কেউই।
স্যাটানিক ভার্সেস প্রকাশিত হওয়ার পরই সলমন রুশদি মৌলবাদীদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে ওঠেন। ইরানের এক ধর্মগুরু তাঁর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ১৩ বছর পর তা তুলে নেওয়া হলেও এখনও তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়ে গিয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক বর্তমানে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা। গুরুতর জখম রুশদির চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড বলছে, তাঁর অবস্থা সংকটজনক। একটি চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version