কলকাতা ব্যুরো: তেলের দাম বাড়ায় বেসরকারি বাস পারলেও ভাড়া বাড়াতে পারেনি রাজ্যের সরকারি বাস। বর্তমান দিনে বাসে পা রাখলেই নূন্যতম ভাড়া গুণতে হয় ১০ টাকা। তবে ভাড়া কমিয়েই বেশি যাত্রীদের টানার আশায় বুক বেঁধেছিল সরকার। কিন্তু সে গুড়ে বলি। সম্প্রতি এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দিনে গড়ে দেড় লক্ষ যাত্রী কমেছে সরকারি বাসে। যা দেখে রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার জোগাড় পরিবহণ নিগমের। জ্বালানি তেলের দাম আকাশছোঁয়া। বেসরকারি বাসগুলি পারলেও তাদের সঙ্গে দৌড়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে সরকারি বাসগুলি। ভাড়া আয়ত্তে রেখেই যাত্রী সংখ্যা বেশি টেনে কিস্তিমাত করতে চেয়েছিল রাজ্য পরিবহন নিগম। কিন্তু তাতে লাভের লাভ তো হয়নি, উল্টে ক্ষতির মুখে পড়েছে।

রিপোর্টে উঠে এসেছে আরও এক চাঞ্চল্যকর বিষয়। যেখানে শহরে দিনে প্রায় আড়াই লক্ষ যাত্রী সরকারি বাসে চড়তেন, সেই সংখ্যা এক লাফে কমে ১ লক্ষ ১০ হাজারে এসে ঠেকেছে। যে কারনে খুব স্বাভাবিকভাবেই কমেছে সরকারি বাসের আয়। এদিকে লাগাতার তেলের দাম বেড়ে চলা এবং যাত্রী সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাওয়ায় শহরতলি ও জেলার একাধিক ডিপো থেকেই বাস বের করতে রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাঁজ পরিবহন দপ্তরের। এদিকে বাসের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। আর সেকারণেই বাস স্টপেজে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর তাই ধীরে ধীরে সরকারি বাস থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন যাত্রীরা। দিনে প্রায় ২০০-এর বেশি বাস কমেছে। ফলে সময়ে বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা।

এছাড়া দীর্ঘদিন লকডাউন ও করোনার প্রকোপ বাড়ায় বহু মানুষ পার্সোনাল বাইক বা চার চাকায় ভরসা রেখেছেন। দু’পয়সা বেশি গেলেও ক্ষতি নেই। প্রাণটা তো বাঁচবে। পাশাপাশি বর্তমান দিনে সরকারি বাসের আশায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা না করে মানুষ অ্যাপ ক্যাব, বাইকের সাহায্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছেন। যাতে হয়তো এক আধ পয়সা বেশি গুণতে হচ্ছে, তবে এক ক্লিকেই একদম বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলি।

তবে এসি বা ইলেকট্রিক বাসের দৌলতে এখনও পুরোপরিভাবে নাস্তানাবুদ করা যায়নি পরিবহন নিগমকে। তাদের দয়া দাক্ষিন্যে কিছুটা হলেও ক্ষতে প্রলেপ লাগছে সরকারের। তবে যে ভাবে সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে সরকারি বাসের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তাতে ভবিষ্যতে আরও বিপদে পড়ার আশঙ্কা সরকারের।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version