কলকাতা ব্যুরো: অপেশাদার হাতেই গড়িয়াহাটের কাকুলিয়া রোডের বাড়িতে জোড়া খুন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। এই ঘটনার তদন্ত ভার কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখাকে দেওয়া হয়েছে। সোমবার মৃতদের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। তার প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, যথেচ্ছভাবে কোপানো হয়েছে পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সুবীর চাকি ও তার গাড়ির চালক রবিন মন্ডলকে। দেহের বিভিন্ন অংশে ধারালো কিছুর আঘাত রয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, অপটু হাতে এই নৃশংস জোড়া হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এক্ষেত্রে হঠাৎ পরিকল্পনা থেকেই দ্রুত খুনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
খড়গপুর আইআইটির পাস আউট এবং জোকা আইআইএম থেকে উচ্চ শিক্ষা নেওয়া সুবীরবাবু একটি বেসরকারি সংস্থার শীর্ষ পদে ছিলেন। বছর ৬১ র সুবির বাবুর কলকাতা এবং নিউটাউনে বেশ কয়েকটি অভিজাত আবাসনে ফ্ল্যাট কেনা রয়েছে তার ছেলে কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন। মেয়ে থাকেন বেঙ্গালুরু।

কাকুলিয়া রোডের তিনতলা এই বাড়িটি বিক্রির জন্য গত বছর খানেক ধরেই চেষ্টা করছিলেন সুবির বাবু। বর্তমানে তারা রুবি এলাকায় একটি অভিজাত আবাসনে থাকেন। সেখান থেকে রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ গাড়ি নিয়ে তিনি কাকুলিয়া আবাসনে পৌঁছন। বাড়ি বিক্রির জন্য কোন খরিদ্দার পাওয়া গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে পুলিশ। বিকেলে সেই সূত্রেই কাউকে এই বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় সুবির বাবুর বাড়ির লোকজন থানায় এবং পাড়ার লোকজনকে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দোতলার একটি ঘর থেকে সুবিরবাবু ও তিনতলার ঘরের মেঝে থেকে তার গাড়ির চালক রবিন মন্ডলের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে।

কেন এমন নৃশংস হত্যা কান্ড ঘটলো তা নিয়ে যথেষ্টই রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখার পর এর পিছনে আর্থিক কোন লাভের জন্যই দুষ্কৃতীরা এই খুন করেছে বলে মনে করছে। পুলিশ কিন্তু এই ঘটনার পিছনে কতজন ছিল তা নিয়ে এখনও সন্ধিহান রয়েছে। সুবির বাবুর পরিবারের তরফে পুলিশকে যা জানানো হয়েছে, তাতে কোন একজনকে রবিবার বিকেল নাগাদ ওই বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে সুবির বাবুর মোবাইল ও চালকের মোবাইল সুইচড অফ হয়ে যায় বলে পরিবার জানিয়েছে। এই অবস্থায় জোড়া খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
		
									 
					