কলকাতা ব্যুরো: এসএসসি নিয়োগ দু্র্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যের দিকে বাড়তি নজর কারা কর্তৃপক্ষের। শনিবার আট সদস্যের মেডিক্যাল টিম পৌঁছয় প্রেসিডেন্সি জেলে। পা এবং পিঠের যন্ত্রণায় ভুগছেন পার্থ। তাই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর শোওয়ার ধরণ বদলের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ব্যায়ামের পরামর্শও দেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েকটি ওষুধও বদল করা হয় তাঁর।
প্রেসিডেন্সি জেলের প্রধান চিকিৎসক প্রণব কুমার ঘোষ সম্প্রতি রিপোর্ট দেন জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীকে। জেলের চিকিৎসকদের দিয়ে একসঙ্গে এতগুলি সমস্যাার চিকিৎসা সম্ভব নয় বলেও ডাঃ ঘোষ তাঁর রিপোর্টে জানান। জেল সুপার জেশপ বিল্ডিংয়ে কারাদপ্তরের ডিআইজি অরিন্দম সরকারের কাছে সেই রিপোর্ট পাঠান। জেশপ থেকে রিপোর্ট যায় নবান্নে। সেখান থেকে তা পাঠানো হয় স্বাস্থ্যরদপ্তরের সিএমওএইচের কাছে। অবশেষে সিএমওএইচের নির্দেশে শনিবার এসএসকেএম থেকে অর্থোপেডিক, মেডিসিন, কার্ডিওলজিস্ট, দন্ত বিশেষজ্ঞ-সহ ৮ জনের একটি মেডিক্যাল টিম পার্থকে দেখতে জেলে যায়।
ঘণ্টাতিনেক ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নানা শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকদের একাধিক সমস্যার কথা জানান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। সূত্রের খবর, পা এবং কোমরে অসহ্য যন্ত্রণার কথা বলেন। পা ফুলে যাওয়ার সমস্যাও রয়েছে পার্থর। মূলত স্থূলকায়তার জন্য্ এই সমস্ত শারীরিক সমস্যার হচ্ছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া মধুমেহ, উচ্চ রক্তচাপের মতো ক্রনিক সমস্যা তো রয়েছেই। পার্থকে পরীক্ষার পর জেলে তাঁর চিকিৎসা সম্পর্কিত একটি গাইডলাইন তৈরি করে দেন চিকিৎসকরা। বেশ কয়েকটি ওষুধ বদল করতে বলা হয়। শোওয়ার ধরণও পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত ব্যায়াম করার কথাও বলা হয়েছে। কীভাবে ব্যায়াম করতে হবে, তাও পার্থকে শিখিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় পার্থকে ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ। তবে কারা সূত্রে খবর, প্রায়ই ভাত খাওয়ার ‘আবদার’ করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইডি হেফাজত শেষে আপাতত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেলের ‘পহেলা বাইশ’ ওয়ার্ডের ২ নম্বর সেলে রয়েছেন। মোটের উপর স্বাভাবিকই রয়েছেন। কারারক্ষীদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলছেন। এদিকে, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে রয়েছেন অর্পিতা। মা এবং দিদি সংশোধনাগারে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন না। সংশোধনাগারে বড়ই নিঃসঙ্গ তিনি। আত্মীয়রা না থাকায় পোশাক পাচ্ছেন না। একটিমাত্র বই পড়েই সময় কাটাচ্ছেন মডেল-অভিনেত্রী।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version