কলকাতা ব্যুরো: রেলের চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে রণক্ষেত্র বিহার। বুধবার যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিহারের আরা ও জেহানাবাদ স্টেশনেও। ভাঙচুর চালানো হচ্ছে একাধিক স্টেশনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে টিয়ার গ্যাস ও লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশকে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে এসেছে ট্রেনে আগুন লাগানোর ভিডিও, সেই ভিডিও দেখে তদন্ত নেমেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এদিন গয়া স্টেশনে একটি ট্রেন ভাঙচুর করে ইঞ্জিন ও কয়েকটি কামরায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় নতুন করে।
অন্যদিকে, দমকল বাহিনীও ঘটনাস্থলে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা জ্বলন্ত ট্রেনের আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। বিক্ষোভের জেরে একাধিক ট্রেনের রুট বদল করে দেওয়া হয়েছে। শেষ খবর অনুযায়ী, বর্তমানে পুলিশ রেললাইন থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে পেরেছে। বিক্ষোভে জড়িত থাকায় সোমবার চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকেই বিহার রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চাকরিপ্রার্থীরা প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। গতকাল থেকে ওই প্রতিবাদে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে চাকরিপ্রার্থীরা ইতিমধ্যে রেলের চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, যে ফল প্রকাশ করা হয়েছে তা দুর্নীতিতে ভরা।
উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বুধবার শয়ে শয়ে চাকরিপ্রার্থী পাটনার রাজেন্দ্রনগর টার্মিনালের কলকাতা-নিউ দিল্লি লাইন অবরুদ্ধ করে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পুলিশ ব্যবস্থা নিতে এলে তাদের দিকে পাথর ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ।
গতকালকের ঘটনায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। খবর পান পাটনার জেলাশাসক ড. চন্দ্রশেখর সিং। তিনি বলেন, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে দোষীদের বিরুদ্ধে। যদিও নতুন করে আন্দোলনের আগুন ছড়িয়েছে জেহানাবাদ ও গয়া স্টেশনে।
প্রসঙ্গত, রেলের সিবিটি ১ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ১৫ জানুয়ারিতে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী সিবিটি ২ পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এই ফলেই গরমিলের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিকে রেলমন্ত্রকের তরফে অপর একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা ভাঙচুর ও বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত, তারা রেলওয়ের চাকরি পাবেন না। বিহারের আরাহ জেলায় একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।