কলকাতা ব্যুরো: প্রায় নজিরবিহীন ভাবেই উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তাহীনতায় এবার মাঠে নামল বিচার বিভাগ। গত কিছুদিন ধরে বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্ট দেখে কলকাতা হাইকোর্টের মনে হয়েছে, মূলত উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের জঙ্গলে হাতি ও বাঘের মত প্রাণীরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায়। তাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করলো কলকাতা হাইকোর্ট।

শুধু হাতি বা বাইসন নয়, ডুয়ার্সের জঙ্গলে হরেক রকমের পাখির আবাস রয়েছে। সামগ্রিকভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিপুল বৈচিত্র ছাড়াও উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে বিভিন্ন ধরণের সরীসৃপও রয়েছে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট দেখে আদালতের মনে হয়েছে, একদিকে চোরা শিকারিদের আক্রমণে হাতি এবং বাইসনের জীবন বিপন্ন হচ্ছে, অন্যদিকে বিদ্যুতের তারের ছোঁয়ায় মৃত্যু হচ্ছে হাতির।

পাশাপাশি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ডুয়ার্স এর মধ্য দিয়ে আলিপুরদুয়ার জংশন পর্যন্ত যাওয়া রেললাইন এখানে ঘাতক হিসেবে চিহ্নিত। এই অবস্থায় হাতি এবং ডুয়ার্সের বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা দ্রুত জানাতে রাজ্যের মুখ্য প্রধান বনপালকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বন ও পরিবেশমন্ত্রককে এই মামলায় যুক্ত করে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্ট তার রায়ে উল্লেখ করেছে, জলদাপাড়া গরুমারার মতো অভয়ারণ্য গুলির কথাও। আদালত মনে করছে, জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ায় এইসব প্রাণীকূল তাদের নিজস্ব আচার-আচরণ হারিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে। তাই এখনই ব্যবস্থা নিতে বিচার বিভাগকে সক্রিয় হতে হবে বলেও মনে করছে হাইকোর্ট।

ডুয়ার্সে রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে হাতির মৃত্যু রীতিমত মাথা ব্যথার কারণ সব পক্ষের। যদিও কেন পরিবেশের তোয়াক্কা না করে হাতির করিডর গুলিকে ব্যবহার করে রেললাইন পাতা হয়েছিল তা নিয়ে আজও প্রশ্ন রয়েছে। এরইমধ্যে গ্রামের বাসিন্দারা হাতির উৎপাত থেকে নিজেদের ফসল বাঁচাতে বিদ্যুতের তার ফেলে রাখেন মাঠের মধ্যে। সেই তারের ছোঁয়ায় একাধিক হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আবার চোরাকারবারীদের হাতে হাতি এবং বাইসনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যপ্রাণ রক্ষায় হাইকোর্টের এই উদ্যোগ প্রায় নজিরবিহীন বলে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন পরিবেশ প্রেমীরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version