কলকাতা ব্যুরো: সুস্থ শীররের জন্য খাওয়া-দাওয়ার যত্ন নেওয়া একান্ত জরুরি। আমরা এমন অনেক স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকি, যা আমাদের শরীরে পুষ্টি জোগায়। কিন্তু প্রতিদিনের এই সমস্ত ফল-সবজির বিশেষ অংশে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। এই বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করলে শারীরিক ক্ষতি সম্ভব। চেরি- হৃদরোগের সম্ভাবনা কমাতে ও পাচন ক্রিয়া সঠিক রাখতে চেরি কার্যকরী। কিন্তু এর বীজ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। এর কঠিন বীজে প্রুসিক অ্যাসিড থাকে, যা আদতে বিষাক্ত। ভুলবশত গিলে ফেললে, কোনও না-কোনও ভাবে এটি শরীর থেকে নির্গত হয়। কিন্তু এর বীজটিকে চিবিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আলু- অনেক সময় আলুর একাংশ সবুজ হয়ে যায়। আবার দীর্ঘদীন থাকার ফলে আলু অঙ্কুরিতও হয়ে পড়ে। সবুজ অথবা অঙ্কুরিত আলুতে গ্লাইকোসাইড নামক এক বিষাক্ত পদার্থ থাকে। গ্লাইকোসাইড যুক্ত সবুজ আলু খেলে আমাশা, ভ্রম, মাথাব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আপেল- অ্যান অ্যাপেল আ ডে, কিপস দ্য ডক্টর অ্যাওয়ে– এই প্রবাদটি আমরা সকলেই জানি, এমনকি মানিও বটে। তবে সাবধান, আপেল খাওয়ার সময় ভুলেও এর বীজ চিবিয়ে খাবেন না। কারণ এর বীজে অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে হলেও, সায়নায়েড থাকে। তবে আপেলের বীজে একটি নিরাপত্তামূলক কোটিং থাকে, যা সায়নায়েডকে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করতে দেয় না। আপেলের বীজের সায়নায়েডের প্রতিক্রিয়ায় শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে।

জায়ফল- এক চিমটে জয়ফল খাবারের স্বাদবৃদ্ধি করে। কিন্তু এক চামচ ভরে জয়ফল খেলে, হীতে বিপরীত হতে পারে। জায়ফলে অত্যধিক পরিমাণে মিরিস্টিসিন নামক রসায়ন থাকে। এর ফলে মাথা ঘোরা, মতিভ্রম, ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাঁচা কাজু- কাজুতে উরুশিওল নামক এক বিষাক্ত থাকে। তাই কাজুকে সেদ্ধ করে তার থেকে এই বিষাক্ত পদার্থকে বার করে নেওয়া হয়। তার পর নানান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে একে প্যাকেটজাত করে বাজারে ছাড়া হয়। বাজারে যে কাজু পাওয়া যায় তা কাঁচা হয় না ও এগুলি নিরাপদ। কিন্তু ভুলেও কখনও কাঁচা কাজু খেয়ে ফেলবেন না। শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।

মাশরুম- নিরামিষাশীদের জন্য ভিটামিন-ডি-এর উল্লেখযোগ্য উৎস হল মাশরুম। তবে মাশরুম বাছাই করার আগেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। সমস্ত ধরণের মাশরুম খাদ্য হিসেবে গ্রহণের উপযুক্ত নয়। জঙ্গলি মাশরুম খেলে পেটে ব্যথা, আমাশা, বমি, ডিহাইড্রেশন, এমনকি লিভারের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

কাঁচা আম- কাঁচা আমের খোসা ও এর পাতায় বিষাক্ত পদার্থ থাকে। অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে, কাঁচা আম খেলে শরীরে লাল ছোপ দেখা দিতে পারে, এমনকি ফোলা ভাবও লক্ষ্য করা যাবে।

কাঁচা রাজমা- বিভিন্ন ধরণের বিনসের মধ্যে কাঁচা রাজমায়ে সর্বাধিক পরিমাণে ল্যাক্টিন থাকে। ল্যাক্টিন এক ধরণের টক্সিন, যা পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে। এটি কাঁচা খেলে বমি ও আমাশা হতে পারে। তাই এটি সেদ্ধ করেই খাওয়া উচিত।

কামরাঙা- কিডনির সমস্যা থাকলে এই ফলটি খাবেন না। কামরাঙায় উপস্থিত বিষাক্ত উপাদানগুলিকে সুস্থ কিডনি ফিল্টার করতে পারে। কিন্তু কিডনিতে সমস্যা থাকলে, তা সম্ভব নয়। তখন কামরাঙার বিষাক্ত উপাদান শরীরেই থেকে যায়। এর ফলে মতিভ্রম হতে পারে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version