কলকাতা ব্যুরো: থেমে গেল প্রায় এক মাসের যুদ্ধ। শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালেই প্রয়াত হলেন সমর বন্দ্যোপাধ্যায়, ময়দান যাঁকে বদ্রু নামেই বেশি চিনত। ৯২ বছরের প্রাক্তন অলিম্পিয়ান তথা প্রিয় ফুটবলারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ময়দান এবং ভারতীয় ফুটবল মহলে। এদিন দুঃসংবাদ শোনার পর টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত ২৭ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনে দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থান অবনতি হচ্ছিল। অ্যালজাইমারস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যাজোটেমিয়া- বিভিন্ন সমস্যা ছিল তাঁর। বাড়িতেই বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থার অবনতি দেখে পরিবারের তরফে বিষয়টি জানানো হয় মোহনবাগান ক্লাবকে। এরপর রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে তাঁর জন্য আলাদা মেডিক্যাল বোর্ডও তৈরি হয়। দু”জন নিউরোলজিস্টও তাঁর চিকিৎসা করছিলেন। সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও দেখা যায়। এর পর বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমআর বাঙ্গুর নিউরোসায়েন্সে স্থানান্তরিত করা হয়।

গত কয়েক দিন ধরেই সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। প্রায় ২৪ দিনের লড়াইয়ের পর শনিবার ভোররাতে প্রয়াত হলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়।

বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফুটবল জীবন বেশ উজ্জ্বল। দীর্ঘ দিন কলকাতা ময়দানের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়েও খেলেছেন তিনি। ১৯৫২-৫৯ সাত বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন বদ্রু। ১৯৫৮ সালে অধিনায়কও ছিলেন। সবুজ মেরুন জার্সিতে ১০টি ট্রফি জিতেছেন। ১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে প্রথমবার ডুরান্ড কাপ এবং রোভার্স কাপ জেতে মোহনবাগান। মোহনবাগান দলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে বিদেশ সফরেও গিয়েছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি। সেই সফরে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ছিলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে চারটে গোল রয়েছে কিংবদন্তি ফুটবলারের। সবুজ মেরুন জার্সিতে মহমেডানের বিরুদ্ধে করেছেন পাঁচ গোল।

১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে এই তারকা ফরোয়ার্ডের নেতৃত্বেই ভারত সেমিফাইনালে উঠেছিল। বাংলা ফুটবলেও তাঁর অবদান কম নয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version