কলকাতা ব্যুরো: শীতলকুচিতে বাহিনীর গুলিতে চারজন গ্রামবাসীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের নয়া নির্দেশিকায় নতুন রাজনৈতিক জল্পনা উসকে দিল। নির্বাচন কমিশন শনিবার রাতে নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বাইরে থেকে কোচবিহার বা শীতলকুচিতে যেতে পারবেন না। এর ফলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রবিবার শীতলকুচির ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথ বন্ধ হল। একইসঙ্গে সিপিএমের তরফেও সোমবার শীতলকুচি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বলে এখন চর্চা শুরু হয়েছে।


এদিন সকালে শীতলকুচিতে ওই ঘটনার পর বিকেলেই কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি চলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাল সকালেই তার শীতল খুচির গ্রামে যাওয়ার কথা ছিল। এদিন শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে মমতা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ তোলেন। তাঁর বক্তব্য, এদিন প্রধানমন্ত্রী শিলিগুড়িতে ছিলেন। তিনি একবারও ঘটনাস্থলে যাওয়ার মানবিকতার দেখাননি। কিন্তু মমতা নিজে যাবেন বলে জানিয়ে দেন।
এদিন কমিশন এই নির্দেশ দেওয়ায় মমতা সহ সব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথ বন্ধ হলো। কমিশনের তরফে অবশ্য যুক্তি দেওয়া হয়েছে, যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক। এই অবস্থায় সেখানে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা গেলে, আবার এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে পারে। তাই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করার স্বার্থে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, আসলে তাদের নেত্রীকে আটকাতেই বিজেপির নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।


এর আগে এদিন দুপুরে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে শীতলখুচির ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। সেই দলে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়নের মত হেভিওয়েট ও বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার ছিলেন। তারাও দাবি করেছিলেন, শুধুমাত্র লিখিত প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূল ক্ষান্ত থাকছে না। দলের নেত্রী নিজেই রবিবার ঘটনাস্থলে যাবেন। কিন্তু এদিন কমিশনের সিদ্ধান্ত এই বাজারে মানবিকতার খাতিরে সেখানে গিয়ে মানুষের আবেগ আগামী দফা গুলিতে নিজেদের ভোটবাক্সে টানার তৃণমূলের চেষ্টা ব্যর্থ হলো বলে দাবি বিজেপির। যদিও তৃণমূলের দাবি, নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে মানুষ বুঝতে পারছে তৃণমূলকে আটকাতেই এমন করা হয়েছে। তার ফল মানুষ বিজেপিকে বুঝিয়ে দেবে, আগামী দফা গুলিতে ভোটের বাক্সেই।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version