কলকাতা ব্যুরো : অন্য বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই তাদের ফোন আসা শুরু হয়। এবারই ব্যতিক্রম। এখনও ফোন আসেনি চন্দননগর, টালিগঞ্জ বা কৃষ্ণনগর থেকে। করোনা ঢাকিদের রোজগারেও থাবা বসিয়েছে। মহালয়া এলেই ঢাকিরা প্রস্তুতি শুরু করে দেন। ঢাকে কাঠি পড়তে শুরু করে। ঢাকির ছেলেরা বাপের সঙ্গে কাসর বাজায় দিনভর। গ্রামে তখন সাজো সাজো রব। কিন্তু এবার নদীয়ার চাপরার দইয়ের বাজার গ্রামে কাশ আর শিউলি ফুটলেও এখনও বরাত পাননি ঢাকিরা।

সারা বছর তেমন রোজগার পাতি নেই তাদের। পুজোর সময় চাতকের মত পূজো উদ্যোক্তাদের ফোনের অপেক্ষায় থাকে তারা। কারণ এই পুজোর মরশুমটাই আয় তাদের। দুর্গাপূজা, কালীপূজা আর জগদ্ধাত্রী পুজোর রোজগারে সারা বছর ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা, জামা কাপড় কেনা আর একটু আনন্দ করার টাকা উপার্জন হয় তাদের। উপরি হিসাবে যা পাওয়া যায় তাই দিয়ে গোটা বছর কোনরকম ভাবে চলে যায় পরিবারের। দূর্গা থেকে কার্তিক পূজো পর্যন্ত যা আয় হয় তা যৎসামান্য – সব মিলিয়ে হাজার কুড়ি। গাজনের সময় ও অল্প বিস্তর রোজগার হয়। বছরের বাকি সময় দিনমজুরি ভরসা।

কিন্তু অবস্থা এবার বেগতিক। ডাক কি আদৌ আসবে ? করোনা যতই প্রকট হচ্ছে এই প্রশ্নই ততো প্রাসঙ্গিক হচ্ছে ঢাকি পাড়ায়। তুষার দাস ওই ঢাকি পাড়ারই বাসিন্দা। জানালেন ” মন ভালো নেই। কি হবে এবার জানি না। ফোন তো এলো না। পরিবারের ভরণ পোষণ করবো কি করে ভাবছি । ” তবে সব ঢাকি যে বরাত পান এমন নয়। অনেকে চতুর্থী পঞ্চমী নাগাদ ঢাক নিয়ে বসেন শিয়ালদা স্টেশনে। সেখান থেকেই ভাড়া করে তাদের নিয়ে যান পূজো কমিটিগুলো। সে আশাতেই বসে এখন ঢাকি পাড়া।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version