কলকাতা ব্যুরো: রাজ্যে কোভিড বিধি-নিষেধের সময়সীমা বাড়ল আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে নবান্নের তরফে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। রাজ্যে বিধি নিষেধ আবারও বাড়লো। শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন রাজ্যে করোনা বিধিনিষেধ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। যদিও তখনও পর্যন্ত বিধি-নিষেধ বাড়ানো নিয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছিল না। এরপর শনিবার রাত আটটা নাগাদ নবান্নের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় আরও একবার রাজ্যে করোনা বিধি-নিষেধ ১৫ দিন বাড়ানো হল৷

তবে গত বছরের মতো এ বছরেও করোনার রক্তচক্ষুর মাঝেই এ বছর দুর্গাপুজো উৎসব পালনে মাততে চলেছে শহর। কিন্তু মহামারী পরিস্থিতিতে কীভাবে হবে শারদ-উদযাপন। সে বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোসব।

ইতিমধ্যেই বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবে প্রস্তুতির সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছে। বিগত বছর প্রশাসনিকভাবে যেসব বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়েছিল সেগুলোকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি শুরু করেছে পুজো কমিটিগুলো। এ ব্যাপারে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের তরফেও কমিটিগুলোকে ইতিমধ্যেই বেশকিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। তবে পুজোর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত মানুষদের টিকাকরণের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। 

এ বছরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাতের ভিড় নয়, সারাদিন ধরে যাতে মানুষকে ঠাকুর দেখতে উৎসাহিত করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যথাসম্ভব কম লোক নিয়ে যেতে হবে। প্যান্ডেলের প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে যথাসম্ভব দীর্ঘ করতে হবে, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। দর্শকদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ঠাকুরের ভোগে কাটা ফল দেওয়া যাবে না। পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধিপুজোর মতো অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ভিড় নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু করোনার দাপটও যেহেতু আছে এবং সঙ্গে রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের ইঙ্গিত। 

প্রসঙ্গত, কোভিড মহামারীর ফলে, আজ বহু জিনিসেরই ভার্চুয়াল স্বাদ নিতে হচ্ছে। গতবছর, দর্শক শূন্য মণ্ডপ বহু পুজোকেই অনলাইনের দিকে আকৃষ্ট করেছিল। পুজো দেখানো থেকে অঞ্জলি… অনলাইনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে কলকাতার দুর্গাপুজোকে। তবে প্রস্তুতি চলছে  জোরকদমে।

প্রসঙ্গত, শেষ পর্যালোচনা বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে ছাড় দিলেও করোনা বিধি-নিষেধ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বলবৎ রেখেছিল রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন গ্রামীণ এলাকায় আশানুরূপ টিকাকরণ না হলে এখনই লোকাল ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।

এদিন নয়া বিজ্ঞপ্তিতে পুরানো সব বিধি-নিষেধ থাকলেও একমাত্র কোচিং সেন্টারের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী নিয়ে কাজ চালু করার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে পুরানো বিধি-নিষেধ বলবৎ থাকছে। টিকাকরণের যুক্তিতে এদিনের বিজ্ঞপ্তিতেও লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি রাজ্য সরকার। ফলে এটা স্পষ্ট যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে যতই আগ্রহ থাকুক, তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখেই আপাতত লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়ে ছাড়পত্র দিতে রাজি নয় রাজ্য সরকার।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version