এক

কোথা থেকে শুরু করি ভেবে পাচ্ছি না। বেনাপোল সীমান্ত নাকি ছোটবেলায় শোনা দেশের গল্প। আসলে সেই জ্ঞান হওয়ার পর থেকে শুনে আসছি দেশের কথা। আচ্ছা তাহলে সেই কথা দিয়েই শুরু করি।

সেই গল্প শোনা দেশটি স্বচক্ষে দেখার বাসনা অজান্তেই মনের মধ্যে বাসা বেঁধেছিল।বয়েস যত বাড়ে দেশে যাওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হতে থাকে আর অবচেতন মনে বাসা বাঁধে অদম্য ইচ্ছেরা। অবচেতন মন কারো নিয়ন্ত্রণে থাকে না তাই সে তার মতো খুঁচিয়ে যায় ক্রমাগত। মনের ছবি রঙের পোঁচ পড়ে উজ্জ্বল হতে থাকে। সেই কচিবেলা থেকে শোনা বাড়ির ঠিকানা তো মুখস্থ… খুলনা জেলা, বাগেরহাট সাবডিভিশন, সোতাল গ্ৰাম,বড়বাড়ি।

ঠাকুমা বলতেন ওটাই আমাদের আসল বাড়ি। কেন বলতেন জানি না,হয়তো মনে আশা ছিল সেখানে ফিরে যাবার। বাড়ির সকলে সুযোগ পেলেই দেশের বাড়ির কথা বলত। সকলে মানে সক্কলে, চেনাজানা চারিদিকে যাঁরা থাকতেন তাঁরাও। বলতে বলতে চোখ মুখ আলো আলো হয়ে যেত কিন্তু কিছুক্ষণ পর সবাই চুপ করে থাকে, মুখের আলো নিভে যায়, দীর্ঘশ্বাস পড়ে।

সেই না দেখা দেশের প্রতি আমার কেমন একটা মায়া জন্ম নেয়। মনে হয় আমাদের ছেড়ে সেও বোধহয় ভালো নেই। দাদুর কাছে শুয়ে ভৈরব নদের গল্প শুনতাম। বাবা বলতেন নিশি বটঠাকুরের পুজোয় জঙ্গলে শেয়ালদের নেমন্তন্ন করার গল্প। ঠাকুমা বলতেন চই দিয়ে মাংস, নারকেল দুধের পোলাও রান্নার কথা আর বলতেন বর্মা দেশের গল্প। চার দাদুর দুজন কর্মসূত্রে বর্মা মানে মায়নামারে থাকতেন। ঠাকুমাদের পালা করে

সেখানে যেতে হতো সংসার সামলাতে। আমার নিজের ঠাকুমা বিজনবাসিনীরকচিবেলা থেকে শোনা বাড়ির ঠিকানা তো মুখস্থ… খুলনা জেলা, বাগেরহাট সাবডিভিশন, সোতাল গ্ৰাম,বড়বাড়ি।

ঠাকুমা বলতেন ওটাই আমাদের আসল বাড়ি। কেন বলতেন জানি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version