কলকাতা ব্যুরো: নতুন করে করোনা বাড়তে থাকলেও বাংলার ভোটের ময়দানে তার জন্য কোন বিধি মানার চেষ্টা নেই। কিন্তু নতুন করে কারোনা বাড়তে থাকায় প্রভাব পরছে ট্যুরিজমে। গত বছর ঠিক এই সময়ে করোনা আতঙ্কে স্তব্ধ হতে বসেছিল গোটা বিশ্বের বহু দেশ। বাদ যায়নি ভারতও। এবার নতুন করে করোনা ছড়ানোয় বাংলার বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে বন্ধ করে দেওয়া হল পর্যটকদের যাতায়াত।
আগামী ২৮ মার্চ দোলের জন্য বুকিং নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল বহু আগে থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি প্রশাসন জানিয়েছে, দীঘা, শংকরপুর, মন্দারমনি তাজপুরের মত সমুদ্র লাগোয়া পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত কোন বুকিং নেওয়া যাবে না। ফলে এখন মাথায় হাত পড়েছে হোটেল মালিকদের। একইসঙ্গে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য পেশার মানুষদের আবার নতুন করে ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি ওল্ড দিঘা এবং নিউ দীঘা হোটেল ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তাতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার দোলের সময় শূন্য রাখতে হবে হোটেলের ঘর। ফলে যারা ইতিমধ্যেই বুকিং নিয়েছিলেন, তাদেরও পর্যটকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। হোটেল মালিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই পাঁচ দিনে অন্তত ৫০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে শুধু ওল্ড দিঘা এবং নিউ দিঘার ব্যবসা। এর বাইরে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র গুলি তো আছেই।
মাঝে কিছুদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশোর কোটায় চলে যাওয়ায় অনেকটাই ছন্দে ফিরেছিল বাজার। কিন্তু গত কয়েকদিনে তুলনায় রবিবার সেই সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে চারশো ছুঁয়ে ফেলায় নতুন করে আতঙ্ক বেড়েছে।
এই অবস্থায় কলকাতার বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুল তাদের পঠন-পাঠন আবার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লকডাউন এর সময় যেমন অনলাইনে পড়ানোর ব্যবস্থা ছিল, সেই পুরনো প্রথাতেই ফিরে যেতে চাইছে স্কুল গুলি। একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কয়েকজনের করোনা দেখা দেওয়ায়, সেখানে কিছু নতুন বিধিনিষেধ আসতে চলেছে।
এতকিছুর পরেও ঘুম ভাঙেনি রাজনৈতিক দলগুলির। যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা ভোটের প্রচারে যাচ্ছেন এবং হাজার হাজার লোক নিয়ে মিছিল করছেন, তাতে দূরত্ব বজায় রাখা দুরস্ত, ন্যূনতম বিধি মানা হচ্ছে না বলে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ। অথচ তারা মনে করছেন, এখনো মুখে মাস্ক এবং করোনা বিধি মানতে দূরত্ব বজায় রাখাই একমাত্র হাতিয়ার। না হলে গোটা এপ্রিল মাস ভোট চলার পর মে মাসে এ রাজ্যের অবস্থা মহারাষ্ট্রের থেকেও খারাপ হতে পারে। কিন্তু রাজনীতিকদের কানে এখন সে কথা ঢুকছে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।