কলকাতা ব্যুরো: কেন্দ্রীয় বাহিনীর অভিযুক্ত জওয়ানদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে কোচবিহারের শীতলকুচি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রিপোর্ট জমা পড়ে। রিপোর্টে সিআইডির বক্তব্য, একমাত্র অভিযুক্ত জওয়ানদের জেরা করা ছাড়া, তদন্তের কাজ শেষ। ইতিমধ্যে চারবার নোটিশ পাঠিয়ে ওই দিন গুলি চালনায় অভিযুক্ত ছয় জওয়ানকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদে আস্তে অস্বীকার করে। ভার্চুয়ালি তারা কথা বলতে রাজি আছে। এই নিয়ে মামলার আগামী শুনানিতে তাদের বক্তব্য জানাতে চায় সিআইডি। এদিন কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হাজির না থাকায় এই শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল কেন্দ্র।

কলকাতা হাইকোর্টের হলফনামা তলবের মাস দেড়েকের মধ্যেই শীতলকুচি কাণ্ডে রিপোর্ট পেশ করলো সিআইডি। বৃহস্পতিবার, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেয় সিআইডি। আদালত সূত্রে খবর, নতুন বছরে অর্থাৎ, ২০২২-এর ১২ জানুয়ারি, শীতলকুচি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। গত ১২ এপ্রিল প্রথম শীতলকুচি-কাণ্ডে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা করেন আইনজীবী আমিনুদ্দিন খান।

সূত্রের খবর, সিআইডির পেশ করা রিপোর্টে লেখা হয়েছে, শীতলকুচি-কাণ্ডের তদন্ত শেষ করেছে সিআইডি। গুলিকাণ্ডের তদন্ত করতে সিআইএসএফ জওয়ানদের সামনাসামনি জেরা করার আবেদনও জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে সিআইএসএফ জওয়ানদের সামনাসামনি জেরা করার আবেদন করেছিল সিআইডি। যদিও, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে বলা হয়, অনলাইনে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলতে পারে। সিআইএসএফের সেই আবেদন কার্যত খারিজ করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা রিপোর্টে, সিআইএসএফ জওয়ানদের সামনাসামনি জেরা করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে সিআইডি।

শীতলকুচির বুথে গুলিকাণ্ডে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে হলফনামা আগেই তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে বিধানসভা ভোটগ্রহণের দিন অশান্তিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। এই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় জোড়া জনস্বার্থ মামলা। এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়ের কাছেই হলফনামা চায় আদালত।

জোড়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে আদালত জানায়, শীতলকুচির গুলিকাণ্ডে সিআইডি তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট আকারে হলফনামা দিতে হবে রাজ্যকে। অন্যদিকে সিআইএসএফ গুলি কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে চালিয়েছিল, তার কার্যকারণ ইত্যাদি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে এই মর্মে কেন্দ্রের কাছ থেকেও একটি হলফনামা নেবে আদালত। কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে এই পিটিশন তলব করে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ। নভেম্বর মাসেই এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল।

অন্যদিকে বিধানসভা নির্বাচনের দিন জোড়পাটকির বুথে সিআইএসএফ গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে জোর শোরগোল শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। এর পর স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর রুজু হয়। আরও একটি এফআইআর করে সিআইএসএফ।

এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় আরও একটি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। তাতে কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল মানিক মৈত্র নামে এক ব্যক্তির মামলা যুক্ত হয়েছে। সেই মামলায় চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। চার্জশিটে মোট ৬ জনের নাম রয়েছে, যার মধ্যে চার তৃণমূল নেতা পলাতক বলে খবর।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version