কলকাতা ব্যুরো: করোনর পর প্রথম বিদেশ সফর, ২ দিনের বাংলাদেশ সফরে প্রধনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তবে বিশেষ অতিথির সাথে থাকছে দুই দেশের মধ্যে মজবুতভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে লক্ষ্য। বিশেষ করে নরেদ্র মোদীর এই সফরের নেপথ্যে থাকছে বাংলাদেশ থেকে চিন বিনিয়োগ দূর করা। এ ছাড়াও আলোচনায় থাকবে তিস্তা জল প্রকল্প ও সীমান্তে সুরক্ষা। বিশেষ করে গরু পাচার সংক্রান্ত বিষয় ও মোটর ভেহিকেল চুক্তির মতো বিষয়গুলি।

যে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হতে পারে

শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের মতই ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে চায় চিন। রাস্তা থেকে শুরু হয়ে সেনার অস্ত্র, প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে চিনের প্রভাব। এ বছরে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশ সেনার প্যারেডে ও লক্ষ্য করা যায় চিনের তৈরী বি ডি ০৮ রাইফেল। আর চিনের এই প্রভাবকেই কমাতে মরিয়া দিল্লি। এই জন্য বাংলাদেশে বেড়েছে ভারতের বিনিয়োগ।২০১৯-২০ সালেই বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ ছিল ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তা ছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে নিষ্পত্তি না হওয়া তিস্তা প্রকল্প নিয়েও ভারতের প্রতি অসন্তোষের কারন রয়েছে ঢাকার। ১৯৯৬ সালে সাক্ষর হাওয়া গঙ্গার জল চুক্তি সাক্ষর হওয়ার পড়েও তিস্তা নিয়ে বিবাদ কাটেনি। যার সুযোগ নিয়েছে চিন। তিস্তায় বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেয় জিংপিং সরকার । যা দ্রুত নিস্পতি করা দরকার দিল্লির তরফে।

দক্ষিণ এশিয়ার সব চেয়ে বড় ভারতের বানিজ্য পার্টনার বাংলাদেশ।২০১৪-১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯.২১ বিলিয়ন ডলারের আমদানী ও ১.৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয় ভারতের সাথে। আর এই বানিজ্যকে আরো বাড়াতে ২০১৫ সালে প্রস্তাবিত মোটর ভেহিকেল চুক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে ভারত। এই চুক্তিতে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান।
কিন্তু একদিকে যেমন বাণিজ্য বেড়েছে, তেমনই অন্য দিকে সীমায় কমছে সুরক্ষা। সীমায় চলছে অবাধ পশু পাচার। যার ফলে প্রাণহানীরও অভিযোগ উঠেছে বার বার। এই অবস্থায় মোদির বাংলাদেশ সফর যথেষ্ট গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

জঙ্গী কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন মোদি
বাংলাদেশের ৫০ তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জঙ্গী কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার ঢাকায় বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্যের যথেষ্ট সুষম পথ রয়েছে। বাধা হচ্ছে জঙ্গী নাশকতার মত কিছু কাজ। এদের থেকে দূরে থাকলে দুই দেশের সম্পর্কের ভিদ আরো মজবুত হবে বলে আশা রাখেন মোদি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতায় ভারত সরকারের ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
দুদিনের সফরে মোদি বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। সে দেশে মতুয়া সংগঠনের যে মন্দির রয়েছে সেখানেও উপস্থিত হওয়ার কথা মোদির। ফলে বিদেশ সফরে গিয়েও পশ্চিমবঙ্গের ভোট রাজনীতির অন্যতম ইস্যু নিয়ে সেখানেও যে কূটনীতি করে আসবেন বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী, তা নিশ্চিত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version