কলকাতা ব্যুরো: গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ‘ নকল বুর্জ খলিফা ভিড় ‘ সকলকে নাকাল করার পর নবমীতে ঘুম ভাঙলো প্রশাসনের। এদিন থেকে লেকটাউন শ্রীভূমির বুর্জ খালিফায় দর্শকের ঢোকা বন্ধ করলো পুলিশ। এমনকি এদিন পুলিশের অনুরোধে যে সমস্ত লোকাল ট্রেন বিকেলের পর শিয়ালদায় ঢুকবে সেগুলো বিকেলের পর আর বিধাননগর স্টেশন দাঁড়াচ্ছে না। কারণ ওই ট্রেন গুলিতে চেপে বাইরে থেকে দর্শকরা দলে দলে লেকটাউনের ওই মন্ডপ দেখতে আসছিলেন। তাই এতদিনে পুলিশ পদক্ষেপ করেছে। দর্শক ঢোকা বন্ধের সঙ্গেই লেসার আলো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এদিন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই মন্ডপে বাইরের দর্শকের ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।


যদিও রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী সুজিত বসুর এই মন্ডপকে কেন্দ্র করে এবার যথেষ্টই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। তার এই সুউচ্চ মণ্ডপ থেকে লেসার আলো জ্বালানোর জন্য দমদম বিমানবন্দরে বিমান নামার ক্ষেত্রে বিমানগুলির সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছিল কয়েকদিন আগেই। তিনটি বিমান সংস্থা এ ব্যাপারে দমদম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানায়। অভিযোগ জানানো হয় নবান্নের কাছেও।
শুধু তাই নয়, এই মন্ডপ দেখতে গত প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন লেকটাউনে। এত মানুষের ভিড় দেখে প্রমাদ গুনলেন চিকিৎসকরা। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ, রাজ্য সরকারের সঙ্গে করোনা আবহে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা বুদ্ধিজীবী সমাজ ও চিকিৎসকও বিরক্ত এই ভিড় দেখে। করোনার তৃতীয় ঢেউ এই ভিড়েই আছড়ে পড়তে পারে বলে বারেবারেই তারা সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রভাবশালীর পুজোয় তেমনভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়নি প্রথমদিকে, এমনটাই অভিযোগ।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের লেসার আলো নিয়ে বারংবার অভিযোগের পরে সুজিত বসুকে দলের তরফে যথেষ্ট পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তৃণমূল সরকারের দমকলমন্ত্রী, একদা সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ভাবশিষ্য সুজিত নিজের এলাকায় যথেষ্টই প্রভাবশালী। তাই সরাসরি এতদিন তার পুজোয় কড়া হস্তক্ষেপ করতে চেষ্টা করেনি পুলিশ। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে চারিদিক থেকে যেভাবে সমালোচনার ঝড় ওঠে, তাতে অষ্টমীর রাতেই পুলিশকে পদক্ষেপ করতে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয় শীর্ষ স্তর থেকে। একেবারে শেষ বাজারে দর্শক ঢোকা বন্ধ হল বুর্জ খালিফায়। এতদিনে সেখান থেকে কতটা করোনা ছড়ালো, তা অবশ্য বোঝা যাবে আর কয়েক দিনের মধ্যেই।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version