কলকাতা ব্যুরো: বউবাজারে দিবারাত্র আতঙ্কের পরিস্থিতি। বাকি বাসিন্দাদের মতো উদ্বেগে এবার নিজের ফ্ল্যাট ছাড়তে চান বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ও। বউবাজারে তাঁর ফ্ল্যাটের ঠিকানা ১০৫ নম্বর, বউবাজার স্ট্রিট। স্যাঁকরাপাড়া লেনের ঠিক পাশে। ২০১৯-এ প্রথমবার যখন দুর্ঘটনা ঘটে, তখন চিড় ধরেছিল তাঁর ফ্ল্যাটেও। সে সময় মাস তিনেক অন্যত্র গিয়েছিলেন। আতঙ্ক ছিলই। এবার আর নতুন করে কিছু না ঘটলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাই বাড়ি বদলের ভাবনা।

এই বাড়িতেই সস্ত্রীক থাকেন বিধায়ক। থাকেন তাঁর মেয়েও। ছেলে থাকেন বিদেশে। প্রত্যেকে উদ্বিগ্ন। তাঁদের প্রসঙ্গ তুলে তাপসবাবু বলেছেন, উদ্বেগ আমার রয়েছে। আমার পরিবারের রয়েছে। আমার স্ত্রী, আমার কন্যা রয়েছেন। বিদেশে আমার ছেলে থাকে। তাঁদের প্রত্যেকে উদ্বেগ রয়েছে। তাই বিকল্প বাসার কথা ভাবতে হচ্ছে আমাকে। আমি ভাবছি। অন্যত্র ঘর খুঁজলেও এই ফ্ল্যাট একেবারে ছেড়ে দেওয়ার কথা তিনি ভাবছেন না। তেমন হলে দরকারে ঋণ নিয়ে অন্যত্র ঘর খুঁজে উঠে যাবেন।

গত বুধবার রাতে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলাকালীন বউবাজারে দুর্গাপিতুরি লেনের পরপর প্রায় ১০-১২টি বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। জরুরি জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে তড়িঘড়ি বাড়ি ছাড়েন অনেকেই। তাঁদের স্থানীয় একটি হোটেলে থাকাখাওয়ার বন্দোবস্ত করে কলকাতা পুরসভা। বর্তমানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ১৫ নম্বর দুর্গাপিতুরি লেনের একটি বিপজ্জনক-সহ মোট দু’টি বাড়ি আংশিক ভাঙা হবে। সোমবারই শুরু হয়েছে বাড়ি ভাঙার কাজ। আপাতত যে অংশটুকু বিপজ্জনক, সেটুকুই ভাঙা হবে। যে অংশ বিপজ্জনক নয়, সেগুলি ভাঙা হবে না। আরও ১২টি বাড়ি নিয়ে পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে, এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ফের বউবাজারের বাড়িতে ফাটলের ঘটনায় কেএমআরসিএলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বারবার এমন বিপর্যয় হচ্ছে বলেই দাবি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। যদিও দাবি খারিজ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার একাধিকবার মেট্রোর প্রকল্পের নকশা বদল করেছে বলে এই বিপর্যয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version