কলকাতা ব্যুরো: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্বস্তি পেলেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা। বৃহস্পতিবার সুকন্যা মণ্ডল সহ মোট ৬ জনের হাজিরার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি টেট সার্টিফিকেটও জমা দিতে হবে না বলে জনিয়ে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ সেপ্টেম্বর।

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন কেষ্ট কন্যা সুকন্যা। বুধবারই অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়ে হাইকোর্টে এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন আইনজীবী ফিরদৌস সামিম। শুধু সুকন্যাই নয়, অনিয়ম করে চাকরি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজন, এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবী। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বুধবার অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে-সুকন্যা সহ আরও ৫ অনুব্রত ঘনিষ্ঠকে টেটের সার্টিফিকেট নিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

তবে আচমকাই মামলায় বদল। বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়েই শুনানি শুরু করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, অনুব্রত কন্যা-সহ মোট ছ’জনের অনিয়ম করে চাকরির অভিযোগ সংক্রান্ত অতিরিক্ত হলফনামা তিনি পড়েছেন। ভালো করে সেই হলফনামা খতিয়ে দেখার পর তাঁর মনে হয়েছে এই মামালায় এখনই সুকন্যা-সহ ওই ছ’জনের আদালতে হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এমনকী তাঁদের সার্টিফিকেট জমা দেওয়ারও এখন কোনও দরকার নেই। তবে প্রয়োজনে নতুন করে মামলা করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি।

এদিকে বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেস থেকে বেরনোর সময় অনুব্রতকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, আপনার মেয়েকে আদালত ডেকেছে, কী বলবেন? জবাব দিতে গিয়ে কিছুটা মেজাজ হারান দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, যা বলার কোর্ট বলবে। আপনি কোন হরিদাস পাল? পরে যদিও বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, মেয়ে পাশ করা। সার্টিফিকেট আছে, চিন্তা নেই।

পাশাপাশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অনুব্রতকন্যাকে তলব করেছেন। এ প্রসঙ্গেও বৃহস্পতিবার মুখ খোলেন অনুব্রত। তিনি বলেন, তলব করেননি। নথি জমা দিতে বলেছেন। কম্যান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে যাওয়ার পথে নিজেকে কিছুটা ‘অসুস্থ’ বলেই দাবি করেন গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত। তিনি বলেন, সারাদিনে ৩২-৩৩টি ওষুধ খেতে হয়। বুকে চাপ আছে।

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর বুধবার সন্ধেয় বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে বেরতে দেখা যায় অনুব্রতকন্যাকে। সকলেই প্রায় ভেবেছিলেন কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন সুকন্যা। তবে পরে জানা যায়, রাতে কলকাতায় পৌঁছননি তিনি। পরিবর্তে বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছন অনুব্রতকন্যা। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ চিনার পার্কে বাড়ি থেকে ফের বেরতেও দেখা যায় তাঁকে। তারপরই সময় মত পৌঁছে যান হাইকোর্টে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version