কলকাতা ব্যুরো: প্রণব মুখোপাধ্যায় মৃত্যুতে ভারতের মতোই আবেগে কেঁদে উঠল বাংলাদেশ। ইন্দিরা গান্ধির মৃত্যুর পর বাংলাদেশের সঙ্গে যে মানুষটির ভারতের একাত্মতা ছিল তার নাম প্রণব মুখোপাধ্যায়।
তিনি কখনো মন্ত্রী থেকেছেন অথবা সাধারণ একজন কংগ্রেস সদস্য, তাতেও বাংলাদেশ থেকে তার প্রাপ্য সম্মানের কখনো ব্যাঘাত ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরন করে বাংলাদেশ সবসময় শ্রদ্ধা জানিয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে।
রবিবার বিকেলে প্রণব বাবুর মৃত্যুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর তার শোক বার্তায় বলেছেন,

প্রণববাবুর মৃত্যুতে ভারত হারালো একজন বিজ্ঞ ও দেশ প্রেমিক নেতাকে। আর বাংলাদেশ হারালো একজন আপনজনকে। তিনি উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকবেন।


হাসিনা তার শোক বার্তায় বারেবারেই উল্লেখ করেছেন ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের কথা। সে সময় যে সাহায্য ভারত থেকে পেয়েছেন স্মরণ করেছে তাও।
একইসঙ্গে প্রণববাবু যে শুধু রাজনীতিক হিসেবে নয়, একজন পারিবারিক বন্ধু হিসেবে তাদের পাশে ছিলেন শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন তার শোক বার্তায়।
তাই প্রণব বাবুর মৃত্যুতে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সু-সম্পর্ক রক্ষাকারী হিসেবে এক যোগ্য অনুঘটকের অভাব হয়ে পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেননা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে সেতু হলে ওঠেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাই প্রণবের মৃত্যু শুধু ভারতবর্ষ বা কংগ্রেস রাজনীতিতে নয়, প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে একজন ভালো সংযোগ রক্ষাকারীকে দেশ হারালো বলে মনে করছেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও।

৩১ আগস্ট ২০২০।
শোক বার্তা
প্রেস উইং, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি, উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিক, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জি- এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে শোকে আপ্লুত ও স্মৃতিকাতর হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রণব মুখার্জির সাথে বঙ্গবন্ধু পরিবার ও শেখ হাসিনার নিজের বহু স্মৃতি প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন।

এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন রাজনীতিবিদ ও আমাদের পরম সুহৃদ হিসেবে প্রণব মুখার্জির অনন্য অবদান কখনও বিস্মৃত হবার নয়। আমি সবসময় মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভারতে নির্বাসিত থাকাকালীন প্রণব মুখার্জি আমাদের সবসময় সহযোগিতা করেছেন। এমন দুঃসময়ে তিনি আমার পরিবারের খোঁজখবর রাখতেন, যেকোন প্রয়োজনে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। দেশের ফেরার পরও প্রণব মুখার্জির সহযোগিতা এবং উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি আমাদের অভিভাবক ও পারিবারিক বন্ধু। যেকোন সংকটে তিনি সাহস যুগিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে ভারত হারালো একজন বিজ্ঞ ও দেশপ্রেমিক নেতাকে আর বাংলাদেশ হারালো একজন আপনজনকে। তিনি উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version