ইন্দ্রনীল বসু

দৃশ্য এক: সাদা অ্যাম্বাসেডর কালো অন্ধকার ভেদ করে ছুটে চলেছে। পেছনে দানবের মত ট্রাক। ধাক্কা মারলো অ্যাম্বাসেডরকে। ক্ষেতে গিয়ে পড়লো গাড়ি। গাড়ি থেকে বেরোলেন এক মহিলা। ট্রাক থেকে নামলো দৈত্যর মত চেহারার এক লোক। ছুরি চালিয়ে ভদ্রমহিলা আর তার গাড়ির ড্রাইভারের গলার নলীটা কেটে মৃতদেহ নিয়ে চম্পট দিল। যদি তুম বাদ বা তালওয়ার সিনেমা গুলো মনে থাকে তবে বলেই দিই। ছবির সিনেমাটোগ্রাফার তুম বাদ বা তলওয়ার খ্যাত পঙ্কজ কুমার।

দৃশ্য ২ – রাজপ্রাসাদসম এক বিশাল বাড়ি। একটি বিয়ের অনুষ্ঠান সবে শেষ হয়েছে। বাড়ির মালিক বয়স্ক রঘুবীর সিংহের দ্বিতীয় বিয়ে। অনুষ্ঠান শেষের কিছুক্ষণ এর মধ্যেই রাঘুবীর খুন। লাশ পরে শোবার ঘরে। আর তখনই বাড়িতে পদার্পণ পুলিশের ইন্সপেক্টর জটিল যাদবের ( নাওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী ) । পরিচালক , হানি ট্রেহান এর প্রথম ছবি নিটফ্লিক স এ মুক্তি ৩১ জুলাই।

ইন্সপেক্টর হলেও জটিল যাদব কিন্তু ওর ম্যানারিজমে আগাথা ক্রিস্টির হার্কুল পয়রতকে মনে করিয়ে দেবে। ছবিটি দেখে নাইফস্ আউট সিনেমাটির কথা মনে পড়ে যাবে। সারা সিনেমা ভাবাবে খুনি কে ? আর পরিচালক এদিকে মজা করে যাবে জটিল আর তার মা কে নিয়ে। মা চায় জটিল এর বিয়ে। নারাজ জটিল। গল্প বলার কোনো তাড়া নেই। এর মধ্যে আবার আছে রাধিকা আপ্তের সঙ্গে জটিল এর প্রেম কাহিনীও। ভারি সাজানো গোছানো প্লট। গল্প বলার ধরন ও সুন্দর। লেখক স্যাক্রাদ গেমস্ খ্যাত স্মিতা সিংহ।এর মধ্যেই আবার গোলাগুলি, বড়লোকি পরিবারের খেউর, কেচ্ছাও আছে। দেশের পুলিশ , রাজনীতিবিদ আর ক্রিমিনাল দের দোস্তির দস্তাবেজও খুলে দিয়েছেন পলিচলক।

ঘুরে ফিরে একটা কথা এসেছে ছবিতে, বাহা র কে দুনিয়া বারি খারাব হ্যায়। কিন্তু রাজপ্রাসাদ সম বাড়ির দুনিয়া যে আরো খারাপ তা কি আর কেউ জানত ? বাড়ির মালিক বুড়ো বয়শ এও রাখেল পোষেন তাই বা কার জানা ছিল।
নওয়াজউদ্দিন, রাধিকা আপটে, ইলা অরুণ ভালো অভিনয় করেছেন সবাই।
ছবি আর নওয়াজউদ্দিন কে দেখতে দেখতে রবীন্দ্রসঙ্গীত এর একটা লাইন মনে পড়ছিল ‘ ঝড় এসেছে ওরে এবার/ ঝড় কে পেলাম সাথী।’ কেনো বলবো না এখন। দেখলে বুঝবেন।

রেটিং ৮/ ১০

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version