অয়ন ঘোষ, কলকাতা ব্যুরো : এবার অডিও ক্লিপিংকে কেন্দ্র করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে সরাসরি আঙ্গুল তুলল গেরুয়া শিবির। রবিবার ভাইরাহ হওয়া কয়েকটি অডিও ক্লিপিংকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী শুভেন্দু অধিকারী এবং দীনেশ ত্রিবেদী। সেই সঙ্গে ছিলেন ছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় আইটি সেলের প্রধান তথা রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। শুভেন্দু বলেন যে অভিষককে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটা কথোপকথন সামনে এসেছে। সেই ভিত্তিতেই শুভেন্দু বলেন যে কয়লা এবং গোরু পাচারের প্রায় ৯০০ কোটি টাকা অভিষেককে পাইয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের যুব নেতা বিনয় মিশ্র এবং তাঁর আত্মীয় তথা পুলিশ আধিকারিক অশোক মিশ্র।
এদিকে রবিবার সকালেই কয়লা পাচার কান্ডে আইডি গ্রেফতার করেছেন অশোক মিশ্রকে। তবে গেরুয়া শিবিরের এই অভিযোগকে ‘সাজানো চিত্রনাট্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন।


জানা যাচ্ছে যে ওই অডিও ক্লিপিং-এ ‘অভিষেক’ নামটা শুনা গেছে। গেরুয়া শিবির দাবি করছে যে ওই ‘অভিষেক’ আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা এও দাবি করছেন যে অই ক্লিপিং-এ যাকে ‘ম্যাডাম’ বলে ডাকা হচ্ছে তিনি হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও উল্লেখ রয়েছে ‘বিনয় মিশ্র’ – এর। বিজেপি এর দাবি ইনিই হচ্ছেন তৃণমূলে যুব নেতা বিনয় মিশ্র। সব মিলিয়ে মোট ৮ টা অডিও ক্লিপিং ভাইরাল হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
বিজেপি এর বিশ্লেষণ অনুসারে ওই ৮টি ক্লিপিং-এর কথপোকথনের বক্তব্য ছিল অনেকটা এইরকম।
১। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করেন
২। আগে কয়লা পাচার বাবদ অভিষেকের কাছে যেত প্রতি মাসে ১৫-২০ কোটি টাকা। কিন্তু গত দুই বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৩৫-৪০ কোটি টাকা। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সুরক্ষা পেতে অনুপ মাঝির থেকে প্রতিমাসে এক বিরাট অঙ্কের টাকা নিতেন অশোক মিশ্র। তিনি সেই টাকা বিনয় মিশ্রকে দিলে তিনি তাঁর কাটমানি রেখে বাকিটা পাঠিয়ে দিতেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাতে।
৩। বিনয় মিশ্র ২০১২-১৩ সাল থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে টাকার লেনদেন করে আসছেন। বিনয় মিশ্র ছিলেন আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অভিষেকের প্রধান লোক।
৪। অভিষেকের নির্দেশে নাকি তাঁর লোকেরা যে কোনও বাড়িতে যখন খুশি আগুন দিতে পারেন, যে কোনও দোকান বা কারখানায় লুঠ চালাতে পারেন। বারবার অভিযোগ করলেও নাকি পুলিশ আসবে না।
৫। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিশ্রমের ফলে যে রাজনৈতিক উত্থান এসেছিল তা অভিষেকের অর্থলিপ্সার জন্য তা শূন্য হয়ে গিয়েছে।
৬। ‘অভিষেক’ এবং তাঁর বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে ‘ম্যাডাম’ অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী ধৃতরাষ্ট্র হয়ে আছেন। আর সেই কারণেই প্রবীণ নেতারা দল ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁরা কোনও সম্মান পাচ্ছিলেন না।
৭। মুখ্যমন্ত্রী আগে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে কাজ করতে চাননি। কিন্তু পরে তিনি হেরে যাবার ভয় পেয়েছেন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তিনি রাজি হয়ে যান।
৮। রাজারহাটে নির্মান কার্যে চলছে সক্রিয় সিন্ডিকেট। তৃণমূল কর্মীরা নিম্ন মানের সামগ্রীর বিনিময়ে সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তোলেন।
রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকে গেরুয়া শিবির ওই অডিয়ো ক্লিপের কথা উল্লেখ করে দাবি করে যে কয়লা, গরু ও বালি পাচার থেকে ৯০০ কোটি টাকা তুলেছেন অভিষেক। একই সঙ্গে দাবি করা হয় সবটাই জানতেন মুখ্যমন্ত্রী।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version