কলকাতা ব্যুরো: করোনার ধাক্কা সামলে রথযাত্রার আনন্দে গা ভাসিয়েছে প্রায় গোটা দেশ। সেজে উঠেছে পুরীর জগন্নাথধাম। আবার এই রাজ্যের কলকাতা ও মায়াপুরের ইস্কন, হুগলির মাহেশেও রথের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও শেষ হয়ে গিয়েছে। রথের রশিতে টান পড়ার আগে দেশবাসীকে টুইটে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

আহমেদাবাদে জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রথযাত্রার দিন আহমেদাবাদের জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে রাজ্যবাসী শুভকামনা করেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল। টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও

করোনার প্রকোপ কাটিয়ে রথযাত্রায় মেতে উঠেছে দেশবাসী। মহিষাদল, জগন্নাথ, মায়াপুরে ঠাসা ভিড় দর্শনার্থীদের। বহু দূর দুরান্ত থেকে জগন্নাথ দেবের দর্শনে পুরীতে ভিড় জমিয়েছেন হাজারো হাজারো পুর্ণার্থী। শুক্রবার সকাল থেকেই মায়াপুরের ইসকন মন্দির, মাহেশ, গুপ্তিপাড়া ও কলকাতায় রথ যাত্রা ঘিরে সাজসাজ রব। গত দু’বছর পর করোনার আতঙ্ক কাটিয়ে লাখো লাখো ভক্ত মেতে উঠেছে রথযাত্রা উৎসবে। আর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হতে চলেছে মহিষাদলের রথযাত্রা। সকাল থেকেই পূজার মধ্য দিয়ে জগন্নাথ দেবের ভোগের আয়োজন করা হচ্ছে।

আজ ৫৬ পদ ভোগ রান্না করা হচ্ছে জগন্নাথ দেবের জন্য। জগন্নাথ দেবের প্রিয় বেশ কিছু পদ রান্না করা হচ্ছে। শাক, পিঠে, পায়েস বিশেষ করে পাটিসাপটা, খাজা গজা কি নেই তাতে। ভোর থাকতেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন পদের ভোগ রান্না। জগন্নাথ দেবের উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করার পরেই বেলা একটা থেকে দেড়টা নাগাদ তিনি পান্ডু যাত্রা করে রথে চড়বেন। এবারের বিশেষ আকর্ষণ সুভদ্রার রথের চাকা পদ্মধ্বজ।

মহিষাদলের বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রীমতী শিউলি দাস জানান, মহিষাদলের রথকে এ বছর আরও নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মেলার আকর্ষণ বাড়াতে জগন্নাথের মাসিবাড়ি গুণ্ডিচাবাটিতে ৩ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন দিন যাত্রা, লোকগান, বাউল, ছৌনৃত্য সহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রথের দিন ২০ হাজার পুণ্যার্থীদের হাতে মদনগোপাল জিউর প্রসাদ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই উল্টোরথ। এ বছর রথযাত্রার মেলা ২৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

অন্যদিকে, তারাপীঠেও রথযাত্রার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এখানকার বিশেষত্ব হল, এখানে রথের সাওয়ারি হন দেবী তারা। প্রাচীনকাল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। বছরের এই একটি দিনে মূল মন্দির থেকে মা তারাকে বের করে নিয়ে এসে রথের মধ্যে চাপানো হয়। তারপর পুরো তারাপীঠ এলাকা পরিক্রমা করে মা তারার রথ। এই অভিনব রথযাত্রা দেখতে ভীড় জমে তারাপীঠে প্রতিবছরই। এ বছরও ভিড় জমেছে।

এদিকে, রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। জগন্নাথদেব গুণ্ডিচা মন্দিরে যাবেন বলে কথা। তাই রথ উপলক্ষে সেজে উঠেছে পুরী। ভিড় জমিয়েছেন বহু পুণ্যার্থী। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে পুরী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুরী স্টেশন ঘুরে দেখেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আদৌ সকলে কোভিডবিধি মানছেন কিনা, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে জোর। স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্তও করা হয়েছে।

Share.
Exit mobile version