কলকাতা ব্যুরো: রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে আরো বিপর্যয়ের আশঙ্কা কলকাতা শহর সহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। কলকাতায় আগামী বুধবার পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। আবহাওয়া দপ্তর ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার দুপুরে জানিয়েছেন, কলকাতায় কমলা সর্তকতা জারি করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের জন্য কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও হুগলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার থেকে বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি বেড়েছে
সোমবার দক্ষিণবঙ্গে একটানা কোথাও ঝিরি ঝিরি আবার কোথাও মুষলধারায় বৃষ্টি চললেও মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গ সেই বৃষ্টি বাড়বে। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা অনুযায়ী, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। মালদা ও দুই দিনাজপুরে মাঝারি বৃষ্টি হবে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গে আরো দু’একদিন লাগবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে।
বৃষ্টি বাড়তে থাকায় উপকূলবর্তী দীঘা, শংকরপুরের মত এলাকার পাশাপাশি সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় যথেষ্টই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে বকখালি, নামখানা সমুদ্র উপকূল, অন্যদিকে হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাটের লাগোয়া এলাকায় সর্বত্র নদী এবং সমুদ্রের জল বাড়ছে।
তাই মৎস্যজীবীদের আগামী কয়েকদিন মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। একটানা বৃষ্টি চলতে থাকায় নদী বাঁধ গুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্লগগুলিতে প্রয়োজনে নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে।
একদিন পরেই লক্ষ্মীপূজো। এই অবস্থায় টানা বৃষ্টিতে পুজোর বাজার ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বৃষ্টির জন্য অধিকাংশ জায়গায় থেকে বাজার বসতে পারছে না। আবার যেখানে বাজার বসে, সেখানেও ক্রেতা তুলনায় সামান্য। বৃষ্টির জন্য ঠাকুর বিক্রী র ক্ষেত্রে বড় ব্যাঘাত তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতে আবহাওয়া দপ্তরের জরুরী সতর্কতাঃ প্রমাদ গুনছে প্রশাসন। কলকাতা শহরে কোনমতেই যাতে জল দাড়িয়ে না যায় সেজন্য সব পাম্পিং স্টেশন গুলিকে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গঙ্গায় জল বাড়তে বাড়তে পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে, তাও দেখতে বলা হয়েছে। এর বাইরে আগামী দুদিন বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আগাম সতর্ক করেছে আবহাওয়া দপ্তর।


রবিবার থেকে চলতে থাকা বৃষ্টিতে শহরগুলিতে যানবাহনের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। এমনিতেই এখন দুর্গাপুজোর আবহে অফিস কাছারিতে ছুটি চলছে। রাস্তায় তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কম। ফলে তার সঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি চলতে থাকায় বাস, অটো তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। সকালের দিকে যদি বা কিছু গাড়ি মেলে, বিকেলের পরে তা আরও কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে। আগামী তিন দিন এই পরিস্থিতি চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে কোনোক্রমে বৃষ্টি আবহাওয়ায় দুর্গাপুজো সুষ্ঠুভাবে মিটে গেলেও, বাংলায় লক্ষ্মী পুজোর আগেই বড় দুর্ভোগ বৃষ্টির জন্য পোহাতে হবে নাগরিকদের।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version