কলকাতা 361° ব্যুরো : করোনা পরিস্থিতিতে বদ্ধ এসি কোচই হয়ে উঠবে না তো সংক্রমনের আঁতুরঘর!
মেট্রো পরিষেবা চালুর আগে সে প্রশ্নই এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মেট্রো কর্তাদের মধ্যে। কারণ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন বদ্ধ জায়গায় সংক্রামণের সম্ভাবনা বেশি। বিশেষত এসি রয়েছে যেখানে। আর সেই এসির চিন্তাই এখন মাথা ব্যথার কারণ পরিষেবা শুরুর আগে। কারণ বর্তমানে অধিকাংশই এসি রেক চলে কলকাতা মেট্রোয়। নন এসি রেকগুলি অধিকাংশই লজঝরে। মাঝে মধ্যেই বিগড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।


চিকিৎসকদেরও দাবি এসিতে এই অসুখ ছড়ানোর প্রবণতা বেশি। তাদের কথায়, কোভিড ১৯ ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। কথা বলা, হাঁচি,কাশির ফলে যে ড্রপলেট তৈরি হয় তা আয়তনে প্রায় ৫ মাইক্রোমিটারের বেশি । এত বড় কণার পক্ষে এক মিটারের বেশি দূর পর্যন্ত যাওয়া খুব মুস্কিল। তাই সেটা এক মিটারের মধ্যেই থিতিয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীদের মত, যে ড্রপলেটের এক মিটারের মধ্যে লুটিয়ে পড়ার কথা, এয়ার কন্ডিশনের বায়ুর প্রবাহ সেগুলোকে অনেকটা বেশি দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে। আর মেট্রোয় এক সঙ্গে প্রচুর যাত্রী থাকবে। সেক্ষেত্রে একজন করোনা রোগী ট্রেনে উঠলে তার থেকে অনেকজনের সংক্রামণের সম্ভাবনা বেশি। আর এখনতো অধিকাংশ রোগী কি বাইরে থেকে বোঝা যায় না তার মধ্যে করোনার সংক্রমণ আছে কিনা।

বিশিষ্ট চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, এখনই মেট্রো চালানোটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। কারণ সোশ্যাল ডিসটেন্স মানাটা সেখানে সম্ভব হবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। যে কোনও বদ্ধ জায়গাই সংক্রমণের আদর্শ জায়গা। তাই এসি কোচে তার সম্ভাবনা বেশি। খুব ভালোভাবে স্যানাটাইজ করলেও আশঙ্কা একটা থেকেই যায়।


শুধু এই সংক্রমনের ভাবনাই নয়,ব্যস্ত সময়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে কি যাত্রী পরিসেবা কতটা সম্ভব, মেট্রোভবনের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে। ভাড়া বৃদ্ধির পরও চার থেকে সাড়ে চার লক্ষ যাত্রী নিয়মিত যাতায়াত করত পাতালপথে সেই সংখ্যাটা নেমে যদি এক লাখেও দাঁড়ায়, তাতেও পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আজ সোমবার বেলা এগারোটার নবান্নে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মেট্রোরেলের জেনারেল ম্যানেজারের বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে কলকাতা পুলিশ কমিশনার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারও উপস্থিত থাকবে বলে জানা গিয়েছে। মেট্রো কবে চলবে তার কিছুটা আভাস এই বৈঠক থেকে পাওয়া যেতে পারে। যদিও রেল বোর্ডের ছাড়পত্র ছাড়া কোনোভাবেই মেট্রো চালানো সম্ভব নয়।


তবে যবে থেকেই চালু হোক তার যাবতীয় প্রস্তুতি সারছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। পাতাল পথকে পুরোপুরি স্যানাটাইজ করা হচ্ছে। করা হচ্ছে প্রতিটি কোচকেও। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে প্রত্যেক যাত্রীকে মাস্ক পরে স্টেশনে ঢুকতে হবে। স্টেশনে প্রবেশের আগে সকলের থার্মাল স্ক্যানিং হবে। শরীরের তাপমাত্রা বেশি হলে যাত্রীকে আর স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সামাজিক দূরত্ব মেনে প্ল্যাটফর্ম এবং টিকিট কাউন্টারের বাইরে হলুদ দাগ দিয়ে যাত্রীদের দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা থাকছে। এক মিটার অন্তর দাঁড়াতে হবে তাদের। স্টেশনে থাকা কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীরা প্রত্যেকেই পিপিই পড়ে কাজ করবেন।
বিশিষ্ট চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, এখনই মেট্রো চালানোটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। কারণ সোশ্যাল ডিসটেন্স মানাটা সেখানে সম্ভব হবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। যে কোনও বদ্ধ জায়গাই সংক্রমণের আদর্শ জায়গা। তাই এসি কোচে তার সম্ভাবনা বেশি। খুব ভালোভাবে স্যানাটাইজ করলেও আশঙ্কা একটা থেকেই যায়। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেট্রো সব দিক থেকেই প্রস্তুত পরিষেবার জন্য। তবে এই বিপুলসংখ্যক যাত্রীর ক্ষেত্রে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেন্টেন করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে।”

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version