কলকাতা ব্যুরো: ভয়াবহ ধসে বিপর্যস্ত মণিপুর। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১। এখনও নিখোঁজ অনেকেই। রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবচেয়ে ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়েও সব মৃতদেহ উদ্ধার করতে এখনও দুই থেকে তিনদিন সময় লাগবে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ইতিহাসে ননের এই ভূমিধস সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা। এই বিপর্যয়ে আমরা ৮১ জনকে হারিয়েছি। তারমধ্যে রয়েছেন টেরিটোরিয়াল আর্মির ১৮ জওয়ান। এখনও ধসের ফলে আটকে আছেন ৫৫ জন। সব মৃতদেহ উদ্ধার করতে এখনও দুই থেকে তিনদিন সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকাজে মদত দিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও সেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। ঘটনাস্থলে প্রচুর কাদা থাকায় গাড়ি চলাচল খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হতে কিছুটা সময় লাগবে।

উল্লেখ্য, বুধবার রাতে ধস নামে টুপুল স্টেশনের কাছে ভারতীয় সেনার ১০৭ টেরিটোরিয়াল আর্মির ক্যাম্পে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অনেকেই সেনা জওয়ান। তাঁরা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন নির্মাণকাজ পাহারায় ছিলেন। ঘটনার পরেই উদ্ধারকাজে শুরু হয়ে যায়। সেনা, রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উদ্ধারকাজে লেগে পড়েন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, ধসে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দার্জিলিং (১০৭ নম্বর টেরিটোরিয়াল আর্মি ইউনিট)-এর ৯ জওয়ান। দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটে লেখেন, মণিপুরে ধসে মৃতদের মধ্যে ৯ জওয়ান আমাদের রাজ্যের, দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। এ’কথা জানতে পেরে আমি শোকস্তব্ধ। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।
এদিকে শনিবারই দেহ ফিরল মণিপুরে ধসে মৃত ছয় জওয়ানের। শনিবার বায়ু সেনার বিশেষ বিমানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় বাংলার ১০ জওয়ানের দেহ। সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙডুবির সেনা হাসপাতালে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেখানেই তাঁদেরকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও। এরপর তাঁদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিমানে বাকি পাঁচ জওয়ানের দেহ আনা হবে। এখনও পর্যন্ত ৮১ জনকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। যাঁদের মধ্যে ১৮ জন টেরিটোরিয়াল আর্মির জওয়ান। প্রায় ৫৫ জন এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধসে এখনও নিখোঁজ ১২ জন টেরিটোরিয়াল আর্মির জওয়ান। এখনও চলছে উদ্ধার কাজ। উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনী, অসম রাইফেলস ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। ওয়াল ব়্যাডারের মাধ্যমেও চলছে উদ্ধার কাজ। মৃতদেহ শনাক্ত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে স্নিফার ডগ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version