কলকাতা ব্যুরো: জীবন তো কাড়ছেই।
করোনা কেড়ে নিচ্ছে অনেকের সারা জীবনের ব্রত।
যেমন মালা রায়।
১৯৮৬-র ৫ নভেম্বর যে পাঁচজনকে নিয়ে বাংলায় মরণোত্তর দেহদানের সচেতনতা প্রসারে যুগান্তকারী আন্দোলনের সূচনা করেছিল ‘গণদর্পণ’, মালা রায় তাঁর অন্যতম সৈনিক।
করোনা পরিস্থিতির জটে তাঁর দেহটাই দান করা গেল না।
অথচ কী অদম্য ইচ্ছাশক্তি ছিল মহিলার।
আর ছিল সাহস।
নাহলে কী দৃষ্টিশক্তিহীন কেউ এমন নাছোড় ব্যতিক্রমী লড়াই করতে পারেন!
ছ’ বছর বয়স থেকেই তিনি দৃষ্টিহীন।
মরণোত্তর দেহদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ করেন তাঁর সহকর্মী, পরিচিতরা।
গত ৫ তারিখ হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
যেহেতু পথে মৃত্যু, তাই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
জানা গিয়েছে, নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও লকডাউনের জন্য মালা রায়ের দেহ দান করা সম্ভব হয় নি।
জীবনযুদ্ধে লড়াই করলেও মালা রায় করোনার কাছে মাথা নোয়ালেন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু না হলেও এমন কঠিন সময়ে তাঁর অঙ্গদান সম্ভব হল না।
আজ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও করোনায় মৃত্যু হওয়ায় সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর দেহদান করাও সম্ভব হয়নি।
অথচ দেহ পোড়ানোয় প্রবল আপত্তি ছিল শ্যামলের।
তাঁর শেষ ইচ্ছেও মানেনি করোনা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version