কলকাতা ব্যুরো: এবারের মতো আইপিএল অভিযান শেষ হয়ে গেলো নাইটদের। লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে বুধবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ ছিল মরণবাঁচনের। ম্যাচটা শুধু জিতলেই হত না, প্লে অফের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে বড় ব্যবধানে জিততেই হতো কেকেআরকে। তবে এদিনের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নাইটরা শেষ পর্যন্ত হার মানলো ২ রানে। আর এই হারের ফলে আইপিএল থেকে ছিটকেই গেলো কেকেআর। প্লে অফে যাওয়া অধরাই রয়ে গেলো কেকেআরের। ইডেনও দেখতে পাবে না ঘরের দল কেকেআরকে। নাইটদের হারিয়ে সুপার জায়ান্টস পৌঁছে গেল প্লে অফে।

বুধবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লখনউয়ের ক্যাপ্টেন লোকেশ রাহুল। তিনি এবং তাঁর সঙ্গী কুইন্টন ডি’ কক ব্যাট হাতে বাইশ গজে তাণ্ডব শুরু করেন। তবে লজ্জার ব্যাপার হল, নাইটরা একটিও উইকেট ফেলতে পারেনি লখনউয়ের। রাহুল ও কুইন্টন ডি’ কক ২১০ রান তোলেন। তার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট কিপার-ব্যাটার ১৪০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। মাত্র ৭০ বলে এই বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। ১০টি বাউন্ডারি ও ১০টি ছক্কা হাঁকান তিনি। অপরাজিত থেকে যান তিনি।

রাহুলও ৬৮ রানে অপরাজিত থেকে যান। রাহুল ও কুইন্টন ডি’ কক আইপিএলের  ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে ফেললেন। ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান করেন রাহুল ও কুইন্টন। তবে এদিন আরও একটি ইতিহাস গড়ল লখনউ। প্রথমে ব্যাট করে গোটা কুড়ি ওভার ব্যাট করে গেলেন লখনউয়ের দুই ওপেনার। এমন নজির নেই কোনও দলেরই। 

অন্যদিকে লখনউ সুপার জায়ান্টসের রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় কেকেআর শিবির। ভেঙ্কটেশ আইয়ার (০) উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন কুইন্টন ডি ককের দক্ষ হাতে। ব্যাট হাতে ওরকম ঝড় তোলার পরে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে শরীর ছুঁড়ে দিয়ে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন দক্ষিণ আফ্রিকান ডি’ কক। অভিজিৎ তোমারও (৪) ফিরে যান দ্রুত। ৯ রানে চলে যায় দুই উইকেট। 

এরপরে নীতীশ রানা ও  অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ইনিংস গোছানোর কাজ শুরু করেন। নীতীশ রানা ব্যক্তিগত ৪২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেটটি হারায় কেকেআর। শ্রেয়স আইয়ার ও স্যাম বিলিংস পালটা মারের খেলা শুরু করেন। ভালোই খেলছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫০ রানে তাঁকে ফিরতে হয়। কেকেআরের রান তখন ১৩১। রবি বিষ্ণোইকে মারতে গিয়ে স্যাম বিলিংস (৩৬) আউট হন। পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপ অনুভব করতে শুরু করে কেকেআর। বাড়তে থাকে আস্কিং রেট। এই অবস্থায় কেকেআরকে বাঁচাতে পারতেন আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু এদিন তিনি ১১ বল খেলে মাত্র ৫ রানে ফেরেন ডাগ আউটে।

তবে সুনীল নারিন ও রিঙ্কু সিং চেষ্টা মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন। রিঙ্কু সিং প্রায় অসাধ্যসাধন করেই ফেলেছিলেন এদিন। কিন্তু শেষ ওভারে রিঙ্কুকে ফিরতে হয় ৪০ রানে। এক হাতে রিঙ্কুর ক্যাচ ধরেন এভিন লিউইস। ওই ক্যাচই জিতিয়ে দেয় লখনউকে। পরের বলেই স্টোয়নিস বোল্ড করেন উমেশ যাদবকে। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ হেরে যায় কেকেআর। সেই সঙ্গে প্লে অফে যাওয়ার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায় নাইটদের। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version