কলকাতা ব্যুরো: শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে ঘনীভূত পরিণত হতে চলেছে। এর ফলে মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বাংলার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে । উপকূলীয় এলাকার শুরু হয়েছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, বকখালি ও সাগরদ্বীপে সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায়। পর্যটকদেরও সমুদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একটানা বৃষ্টি ও বাতাসের গতিবেগে আতঙ্কে সুন্দরবনবাসী।

বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর-সমেত উপকূলের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন। সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায়। নিম্নচাপ ও কোটালের জোড়া ফলার মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। প্রায় ১০৫টিরও বেশি ত্রাণকেন্দ্র ও স্কুল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলে বিপদ বুঝলেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে বাসিন্দাদের। দু’টি বিশেষ সিভিল ডিফেন্সের দলও তৈরি। এই দলগুলি বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত। রয়েছে একটি মহিলাদের দল। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুন্দরবনের ব্লকে পাঠানো হবে দলগুলিকে।

জেলা সদর আলিপুরে একটি মেগা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি কাকদ্বীপ, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার মহকুমাশাসকের দফতর ও সুন্দরবনের ১৩টি ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রতিটি পঞ্চায়েতকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপের পাশাপাশি আগামী বৃহস্পতিবার পূর্ণিমার ভরা কোটাল।

তবে কোটাল চিন্তা বাড়াচ্ছে। জলস্তর বাড়লে ফের নদী বাঁধ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে শঙ্কা সুন্দরবনবাসীদের। গত গুরুপূর্ণিমাতেও জলস্তর বৃদ্ধিতে সুন্দরবনের একাধিক মাটির তৈরি নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এক গ্রামবাসীর কথায় আগে ঝড়ের পর থেকে প্রতি বার অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ভরা কোটালে সুন্দরবন উপকূলের কাঁচা মাটির নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জলে প্লাবিত হয় এলাকা। কিছু কিছু জায়গায় পাকা বাঁধ নির্মাণ করেছে প্রশাসন। এখন কিছু অংশ কাঁচা মাটির নদী বাঁধ থাকায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে প্লাবিত হয় এলাকা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version