কলকাতা ব্যুরো: অবশেষে গ্রেপ্তারের ৪৫ দিন পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন আরামবাগের ইউ টিউব চ্যানেলের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে জামিন পেয়েছেন চিত্র সাংবাদিক ও শফিকুলের স্ত্রী। তাঁদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করেছিল আরামবাগ পুলিশ।

অভিযোগ পাওয়ার দিনই রাতের বেলায় যেভাবে করোনা প্রতিরোধ সরঞ্জাম না পড়েই পুলিশ ঢুকে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে আনা হয়, সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পুলিশের প্রবল সমালোচনার মধ্যেই সেখানকার পুলিশ সুপার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে আরামবাগ পুলিশের কাজের স্বপক্ষে যুক্তি দেন। তাতে পুলিশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ আরও তীব্র হয়। এমনকি যে ভাবে নিম্ন আদালতে পুলিশ আবেদন করতেই ওই সাংবাদিকের পুলিশ হেফাজত দেয়, তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ হয় হাইকোর্টে।

আবার এর আগে শফিকুলের আবেদনে অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ যে সব পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, তাতে পুলিশের শীর্ষকর্তাদেরও আরামবাগে বাহিনীর একাংশের এমন বেআইনি কাজের অভিযোগ নিয়ে বিড়ম্বনা বাড়তে পারে।

আবার আর একটি মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভিন্ন মত শুনতে খারাপ লাগছে বলে তার কণ্ঠ রোধ করলে গণতন্ত্র থাকে না। আবার সাংবাদিককেও সৎ থাকতে হয় তাঁর পেশার প্রতি। শফিকুলের বিরুদ্ধে তোলা চাওয়ার অভিযোগ পুলিশ আনলেও তার কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাঁকে পুলিশের হেফাজতে রাখার কোনও যুক্তিও পায়নি হাইকোর্ট।

এর আগে বিচারপতি বাগচী প্রশ্ন তুলেছেন, ঘটনার তিন মাস পরে কেন এফআইআর করা হলো? এফআইআর করার পরে প্রাথমিক তদন্ত পুলিশ করেছিল? কেন এফআইআরের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে মাঝরাতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে এমন তড়িঘড়ি তাঁর বাড়িতে যেতে হলো? শফিকুল ইসলামের গ্রেপ্তারের ঘটনায় রীতিমতো গুচ্ছ প্রশ্ন তুলেই তার জবাব হাইকোর্ট চেয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে। তিনমাসের মধ্যে সে রিপোর্ট চায় আদালত।

একইসঙ্গে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির আরও প্রশ্ন, যে পুলিশ অফিসাররা ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এমন মামলা করেছেন তাঁদের এমন মামলা করার পিছনে কোনো ব্যক্তিস্বার্থ আছে কি না তা-ও জানাতে হবে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে।

এক ব্যক্তির থেকে তোলার টাকা না পেয়ে অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার মিথ্যে খবর করার অভিযোগে শফীকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২৯ জুন মাসে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই রাতেই পুলিশ তাঁর বাড়ি গিয়ে স্ত্রী, দুই সন্তান সহ ওই সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যায়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version