কলকাতা ব্যুরো: সংগীতশিল্পী কেকে’র মৃত্যুর ঘটনায় এবার নয়া মোড়। এবার সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা দায়েরের অনুমতি দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মূলত যে আইনজীবী এই মামলাটি করছেন তাঁর নাম রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তবে এদিন হাইকোর্টে সিবিআই ও ইডি চেয়ে মোট তিনটে মামলা দায়ের হয়েছে। অনুষ্ঠানে এত টাকা এলো কোথা থেকে? সেটা খুঁজতেই ইডি তদন্ত চাওয়া হয়েছে।

কেকে-র মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়ে সোমবার সকাল থেকে কলকাতা হাইকোর্টে মোট ৩টি জনস্বার্থ মামলা রুজু হয়েছে। প্রথমটিতে কেকে-র মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে মামলা করেন আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। একই দিনে দ্বিতীয় জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায়ের তরফে কেকে-র মৃত্যুর আসল কারণ খুঁজে দেখার জন্য তদন্তের দাবি উঠেছে। এরপর তৃতীয় তথা এই জনস্বার্থ মামলায় আবেদনকারীর দাবি, কেকে-র অনুষ্ঠানের জন্য ২০-২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে এল? মামলার আবেদনে তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। ফলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নির্বাচিত কোনও ছাত্র সংসদ নেই। তবে কি এই অনুষ্ঠানের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ টাকা ঢেলেছেন? নাকি কোনও ছাত্র সংগঠনের তরফে সেই টাকা দেওয়া হয়েছে? তা-ই যদি হয়, তবে সেই টাকা কোথা এল? প্রশ্ন আবেদনকারীর। এ সবই ইডি-কে দিয়ে খতিয়ে দেখা হোক বলে দাবি তাঁর।

গত ৩১ মে গুরুদাস কলেজের ফেস্টে ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে পারফর্ম করেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। অনুষ্ঠানের পর হোটেলে ফিরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিল্পীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অনেকেই কেকে’র মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলেই দাবি করেছিলেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর থিওরি খারিজ করেন তদন্তকারীরা।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, হৃদরোগই প্রাণ কেড়েছে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পীর। সংগীত শিল্পীর স্ত্রীর দাবি, হজমের সমস্যায় ভুগতেন কেকে। সেই কারণে প্রায় প্রতিদিনই ওষুধ খেতেন। চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ খাওয়ার ফলে বিপত্তি বলেই মত অনেকের।

জানা গিয়েছে, কলকাতায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার সময় থেকে কাঁধে ও হাতে ব্যথার কথা সঙ্গীদের বলেছিলেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হৃদরোগের ফলে বড়সড় বিপদ যে আসতে চলেছে, কাঁধে ও হাতে ব্যথাই ছিল তার প্রাথমিক লক্ষণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশনেই (হৃৎপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছনোয় যখন কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হন) প্রাণ হারিয়েছেন কেকে। ফুসফুসে জল জমে গিয়েছিল তাঁর। অটোপসি সার্জেনদের মতে, বেশ কয়েক বছর যাবৎ হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় ভুগছিলেন কেকে। শোনা গিয়েছে, তাঁর হৃৎপিণ্ডের চারপাশে পুরু চর্বির স্তর ছিল। একে আবার ফ্যাটি হার্টও বলা হয়।

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর কারণ আসলে কী? তা জানতেই এদিন সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করার আবেদন জানানো হয়। যাতে অনুমতি দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

Share.

1 Comment

  1. Pingback: কেকে-কে শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ উদ্যোগ কবিরাজ বাগানের

Leave A Reply

Exit mobile version