কলকাতা ব্যুরো: যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ভারতীয় বায়ুসেনার C-17 পরিবহন বিমানকে অপারেশন গঙ্গায় মোতায়েন করা হলো। রোমানিয়ায় ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে সেই বিমান। 

মঙ্গলবার আইএএফ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে ইউক্রেন থেকে ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে C-17 বুধবার ভোর ৪ টেয় রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। প্রায় ৩০০ জন যাত্রী বহন করার ক্ষমতা সম্পন্ন বিমান C-17 দিল্লির কাছে হিন্দানে তার হোম বেস থেকে যাত্রা শুরু করে। দুর্গত স্থানগুলিতে ওষুধ, খাবার-সহ নানা ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে দিল্লি। আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আইএএফকে, ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে অপারেশন গঙ্গায় যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিদেশ সচিব শ্রিংলা বলেছেন, ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে বুধবার ভোর চারটেয় C-17 আইএএফ বিমান রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে উড়বে যাবে। তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে, ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য ২৬ টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে”। বুখারেস্ট এবং বুদাপেস্ট ছাড়াও, পোল্যান্ড এবং স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের বিমানবন্দরগুলিও ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হবে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে  ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেলের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়ার সামরিক অভিযানে কিভের ভয়াবহ অবস্থা এবং মানবিক সংকট নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। জানা গিয়েছে, সেই আলোচনাতেও ফের যুদ্ধবিরতি করে আলোচনায় বসার আর্জি জানিয়েছেন নমো। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে।

যুদ্ধদীর্ণ ইউক্রেনের মানুষের জন্য ভারতের তরফে যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তারও এ দিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সব রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধার উপর ভিত্তি করে যে আন্তর্জাতিক আইন ও রাষ্ট্রসংঘের সনদ রয়েছে, তা মেনে চলার উপরও বৈঠকে জোর দেন মোদী।

দু‘পক্ষের কাছেই আলোচনার আবেদন জানিয়ে প্রত্যেক নাগরিক যাতে মুক্ত ভাবে সর্বত্র বিচরণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এর আগে, ইউক্রেনের খারকিভে গোলাগুলিতে ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট। কর্নাটকের হাভেরির বাসিন্দা নবীন শেখরাপ্পা মেডিক্যালের ছাত্র ছিলেন। মঙ্গলবার খারকিভে একটি সরকারি ভবন উড়িয়ে দেয় রাশিয়ার বাহিনী। তাতেই প্রাণ যায় নবীনের। ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস জরুরি ভিত্তিতে ভারতীয়দের কিভ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় কর্নাটকের ছাত্রের।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version